মহাকালেশ্বরের কথা যতই জানা যায় ততই মনে হয় কম। কাশীর বাবার এই জ্যোতির্লিঙ্গ- এর সম্পর্কে আরও কিছু জেনে নেওয়া যাক-
বাবার মন্দিরে বাবার অনুমতি ছাড়া কেউ প্রবেশ করতে পারে না । অনাদিকাল থেকে পণ্ডিত, পুরোহিত ও দর্শনার্থীরা মহাকালেশ্বর বাবার দর্শন লাভের জন্য রৌপ্য দরজা দিয়ে প্রবেশ করে আসছে, কিন্তু এই দরজায় প্রবেশ করা সহজ নয়। শয়ন আরতির পর বাবাকে বিশ্রাম দেওয়া হলে এই দরজা বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সকালে এই দরজা খোলবার জন্য প্রথমে বাবা মহাকালের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়।
পন্ডিত এবং পুরোহিতরা যারা সকালে বাবাকে জাগানোর জন্য আসেন তারা মহাকালের কাছে দরজা খোলার অনুমতি চান। কারোর বাড়িতে গেলে দরজা খোলার জন্য যে ডোরবেল বাজাই ঠিক তেমনই।
এভাবে মহাকালেশ্বরের কাছে গেট খুলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাঁচিয়ে অনুমতি নেওয়া হয়। এর পরে রৌপ্য দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং বাবার ভস্ম আরতি করা হয়। তথ্য অনুযায়ী, বাবা মহাকালের অনুমতি ছাড়া রুপার দরজা খুলে কেউ মন্দিরে প্রবেশ করতে পারে না।
মহাকালেশ্বর মন্দিরে সকালের ভস্ম আরতির মধ্য দিয়ে শুরু হয় পূজোর ক্রম। এরপর সকালের আরতি ও ভোগ আরতি হয়। এরপর সন্ধ্যায় বাবাকে বিশেষভাবে সাজানো হয়। সন্ধ্যা আরতির পরে, বাবাকে ঘুমনোর আগে রাতে একটি বিশেষ আরতিও করা হয়।
উত্তর-পূর্ব কোণে গর্ভগৃহে বাবার জ্যোতির্লিঙ্গ রয়েছে। এই কোণ মানে সম্পূর্ণ জ্ঞান এবং প্রতিটি শিল্পে পরিপূর্ণ আদালত।
মন্দিরের প্রধান ফটক দক্ষিণমুখী এবং বাবা বিশ্বনাথের মুখ অঘোরের দিকে। এখান থেকে মন্দিরের প্রধান ফটক দক্ষিণ থেকে উত্তরে প্রবেশ করে। তাই বাবার অঘোর রূপ প্রথম দেখা যায়। এখান থেকে প্রবেশ করলেই পূর্বে করা পাপ বিনষ্ট হয়।
ভৌগোলিকভাবে, বাবাকে ত্রিকান্তক বিরাজতে অর্থাৎ ত্রিশূলে উপবিষ্ট বলে মনে করা হয়। মাদাগিন এলাকা যেখানে এক সময় মন্দাকিনী নদী প্রবাহিত হত এবং গৌদোলিয়া এলাকা যেখানে গোদাবরী নদী প্রবাহিত হত। এই দুইয়ের মাঝখানে বাবা স্বয়ং জ্ঞানবাপীতে বসে আছেন। মাদাগিন-গৌদৌলিয়ার মাঝখানে জ্ঞানভাপির নীচে রয়েছে, যা ত্রিশূলের মতো গ্রাফে গঠিত। তাই বলা হয় কাশীতে কখনই বিনাশ হতে পারে না।
বাবা বিশ্বনাথ কাশীতে গুরু ও রাজা হয়ে বসে আছেন। তিনি গুরুরূপে কাশীতে দিনভর ভ্রমণ করেন। রাত নয়টায় যখন বাবার শ্রিংগার আরতি হয়, তখন তিনি রাজকীয় পোশাকে থাকেন। তাই শিবকে রাজরাজেশ্বরও বলা হয়।
বাবা বিশ্বনাথ এবং মা ভগবতী কাশীতে আছেন। মা ভগবতী অন্নপূর্ণার রূপে প্রতিটি কাশীতে বসবাসকারী মানুষকে খাওয়ান। যেখানে মৃত্যুর পর বাবা তারক মন্ত্র দিয়ে মোক্ষ প্রদান করেন। তাই বাবাকে তদকেশ্বরও বলা হয়।
বাবা বিশ্বনাথের অঘোর দর্শনে বহু জন্মের পাপ ধুয়ে যায়। বাবা বিশ্বনাথও শিবরাত্রির সময় আউধা রূপে বিচরণ করেন। ভূত-প্রেত, পশু-পাখি, দেব-দেবী, পশু-পাখি সবাই তার এতে শামিল।
No comments:
Post a Comment