হিন্দু ধর্মে, পূজোর সময় প্রায়ই তামার পাত্র ব্যবহার করা হয়। বলা হয় তামার পাত্র সম্পূর্ণ বিশুদ্ধ। এসব পাত্র তৈরিতে অন্য কোনও ধাতু ব্যবহার করা হয় না। কেন তামার বাসন ব্যবহার করা হয় তার পেছনে দুটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।
এর মধ্যে একটি হল পৌরাণিক কারণ, যা শাস্ত্রে বর্ণিত হয়েছে। অন্য কারণটি বৈজ্ঞানিক দিকের সাথে সম্পর্কিত। বিজ্ঞান আরও বিশ্বাস করে যে তামার বাসন ব্যবহারে অনেক ধরণের রোগ নিরাময় হয়।
পৌরাণিক কারণ:
বরাহ পুরাণ অনুসারে, প্রাচীনকালে গুদাকেশ নামে এক রাক্ষস ছিল। রাক্ষস হওয়া সত্ত্বেও তিনি ভগবান বিষ্ণুর একান্ত ভক্ত ছিলেন। ঈশ্বরকে সন্তুষ্ট করার জন্য তিনি কঠোর তপস্যাও করেন।
একবার, অসুরের কঠোর তপস্যায় খুশি হয়ে শ্রী নারায়ণ উপস্থিত হয়ে তার কাছে বর চাইলেন, তখন রাক্ষস গুদাকেশ বর চাইলেন যে প্রভু, সুদর্শন চক্র দিয়ে যেন তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পরে সমস্ত শরীর তামা হয়ে যাক এবং সেই তামাটি যেন একটি অত্যন্ত পবিত্র ধাতু হয়ে উঠুক।
যেগুলি চিরকাল পূজোয় ব্যবহার করা হবে। সেগুলোর উপর যেন আপনার আশীর্বাদ থাকে।
ভগবান বিষ্ণুর বর পেয়ে রাক্ষস গুদাকেশ খুব খুশি হন। তখন ওই অসুরের দেহকে কয়েক টুকরো করা হয়েছিল, তারপরে গুদাকেশের মাংস থেকে পবিত্র ধাতু, রক্ত থেকে সোনা, হাড় থেকে রৌপ্য ইত্যাদি তৈরি করা হয়েছিল, যে কারণে সর্বদা ঈশ্বরের উপাসনার জন্য তামার পাত্র ব্যবহার করা হয়।
বৈজ্ঞানিক বৈধতা:
বৈজ্ঞানিক গবেষণায় তামার স্বাস্থ্যগত বৈশিষ্ট্যও প্রমাণিত হয়েছে। কপারে অনেক প্রয়োজনীয় খনিজ রয়েছে যেমন অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টি-কার্সিনোজেনিক যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
কেন পূজোয় অন্যান্য পাত্র ব্যবহার করা হয় না:
ইস্পাত, লোহা বা অ্যালুমিনিয়ামের পাত্র পূজোয় ব্যবহার করা হয় না কারণ এগুলোকে খুবই অশুভ মনে করা হয়। তামা ছাড়াও সোনা, রৌপ্য বা পিতলের পাত্রে জলাভিষেক করা শুদ্ধ বলে বিবেচিত হয়।
No comments:
Post a Comment