জানেন কী সাপ কেন গর্ভবতী মহিলাদেরকে কামড়ায় না?

জানেন কী সাপ কেন গর্ভবতী মহিলাকে কামড়ায় না?

ব্রেকিং বাংলা লাইফস্টাইল ডেস্ক, ১৮ মে : সনাতন হিন্দুধর্মের সাথে অনেক ঐতিহ্য এবং বিশ্বাস জড়িত।   তাই কিছু লোক আছে যারা এই বিশ্বাসগুলোকে শুধুমাত্র মিথের নাম দিয়ে থাকে।  কিন্তু ধর্মগ্রন্থ, বেদ ও পুরাণে উল্লেখিত এই বিশ্বাসের কথা সবারই জানা উচিৎ।

 অনেক বিশ্বাসের মধ্যে একটি জনপ্রিয় বিশ্বাস রয়েছে যে সাপ কখনই গর্ভবতী মহিলাকে কামড়ায় না।  গর্ভবতী মহিলাকে দেখে সাপ অন্ধ হয়ে যায় বলেও দাবি করা হয়।  কথিত আছে, কোনো নারী গর্ভধারণের সঙ্গে সঙ্গে সাপ তার কাছে যায় না।  চলুন জেনে নেই এর পেছনের কারণ কী-

 গর্ভবতী মহিলাকে সাপে কামড়ায় না কেন?

 প্রকৃতি সাপকে কিছু বিশেষ ইন্দ্রিয় প্রদান করেছে যাতে  সহজেই জানতে পারা যায় যে একজন মহিলা গর্ভবতী কি না? এটি ঘটে কারণ গর্ভাবস্থার পরে নারীর শরীরে এমন কিছু উপাদান তৈরি হয় যা সাপ সহজেই সনাক্ত করতে পারে।  কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে গর্ভবতী মহিলাকে শনাক্ত করার পর কেন সাপ তাকে কামড়ায় না? এই প্রশ্নের উত্তর রয়েছে ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের একটি গল্পে।  

ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের গল্প -

 ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের কিংবদন্তি অনুসারে, একবার এক গর্ভবতী মহিলা একটি প্যাগোডায় শিবের তপস্যা করছিলেন।  তিনি সম্পূর্ণ তপস্যায় নিমগ্ন ছিলেন।  দুটি সাপ প্যাগোডায় এসে গর্ভবতী মহিলাকে বিরক্ত করতে শুরু করে।  এ কারণে মহিলার মনোযোগ বিক্ষিপ্ত হয়ে যায়।  তপস্যা ভঙ্গের কারণে নারীর গর্ভে বেড়ে ওঠা শিশুটি সমগ্র সর্প বংশকে অভিশাপ দিয়েছিল যে আজকের পর যখনই কোনও সাপ বা নাগ কোনও গর্ভবতী নারীর কাছে যাবে তখনই সে অন্ধ হয়ে যাবে।  এই ঘটনার পর এমন একটি বিশ্বাস প্রচলিত হয়ে যায় যে, গর্ভবতী মহিলাকে দেখলেই সাপ অন্ধ হয়ে যায় এবং তাকে কামড়ও দেয় না।  এমনও একটি বিশ্বাস রয়েছে যে একজন গর্ভবতী মহিলা কখনও স্বপ্নেও সাপ দেখেন না।  গল্পে আরও বলা হয়েছে যে এই মহিলার গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া শিশুটি এগিয়ে গিয়ে শ্রী গোগা জি দেব, শ্রী তেজা জি দেব এবং জহরবীর নামে বিখ্যাত হয়েছিলেন।

 গর্ভবতী মহিলাকে সাপে না কামড়ানোর বৈজ্ঞানিক কারণ:

 গর্ভবতী মহিলাকে কামড় না দেওয়ার পেছনে শুধু ধর্মীয় বিশ্বাসই নয়, বৈজ্ঞানিক কারণও রয়েছে।  বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন যে একজন মহিলার গর্ভধারণের পর শরীরে কিছু উপাদান তৈরি হয় এবং অনেক পরিবর্তনও ঘটে।  এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল হরমোনের ক্ষরণ।  যে কারণে গর্ভাবস্থায় একজন মহিলার প্রকৃতি, আগ্রহ এবং বর্ণের পরিবর্তন ঘটে।  বিজ্ঞানীদের ধারণা, হয়তো সাপটি নারীর শরীরে এই হরমোনের পরিবর্তনের কথা জানতে পেরে তার ধারে কাছে না গিয়ে পথ পাল্টে ফেলত।  তবে এটি পুরোপুরি নিশ্চিত করা হয়নি।  

 এই জিনিসের যত্ন :

 কোন ব্যক্তির একটি সাপ হত্যা করা উচিৎ নয়। তবে বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলার কখনই সাপ মারা উচিৎ নয়।

     হিন্দু ধর্মে সাপকে হত্যা করাকে মহাপাপ বলা হয় এবং এর ফল বহু জন্মে ভোগ করতে হয়।

      সাপ যে গর্ভবতী মহিলাদের কামড়ায় না তা নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও গবেষণা হয়নি।

     গর্ভাবস্থায় সাপের কাছাকাছি যাওয়া আপনার এবং অনাগত শিশুর জ্ঞাতসারে বা অজান্তে ক্ষতি করতে পারে।

     তাই যদি গর্ভবতী হন এবং আশেপাশে সাপ দেখতে পান তাহলে সাবধান হন।