অজানা বারাণসীর গল্প

 

 অজানা বারাণসীর গল্প 

মৃদুলা রায় চৌধুরী, ৩০ এপ্রিল : মৃত্যু যে কোন জীবের জন্য জীবনের সবচেয়ে বড় সত্য।  সারা পৃথিবীতে মানুষ মৃত্যুতে শোক করে। কিন্তু বারাণসী এমনই একটি জায়গা যেখানে মৃত্যু একটি উদযাপন আর মহান আড়ম্বর সঙ্গে পালিত হয়। একদিকে যেখানে গোটা বিশ্ব মৃত্যুকে ভয় পায় এবং যে কোনও উপায়ে মৃত্যুকে এড়াতে চেষ্টা করে, অন্যদিকে এই বারাণসীতে এমন একটি জায়গা রয়েছে যেখানে সারা দেশ থেকে মানুষ মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করতে আসে।

 সেই জায়গাটি :

 বারাণসীতে যে জায়গাটিতে মানুষ এসে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করে তাকে বলা হয় মুমুক্ষু ভবন।  মুমুক্ষু ভবন ১৯২০ সাল থেকে বারাণসীতে বিদ্যমান।  প্রায় ৮০ থেকে ১০০জন মানুষ এখানে এক সময়ে অবস্থান করে এবং মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করে।  প্রতি বছর এখানে হাজার হাজার লোক আবেদন করে আর তাদের মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করে, , কিন্তু বেশি লোকের জন্য জায়গার অভাবে বেশিরভাগ লোকই মুমুক্ষু ভবনে নিজেদেই জীবন বিসর্জন দেওয়ার আনন্দ পান না।

 বারাণসী আর মোক্ষের গল্প :

বারাণসীকে প্রাচীনতম ধর্মীয় শহর বলে মনে করা হয়।  কথিত আছে এই ভূমি ভগবান শিবের।  এই জায়গায় যার মৃত্যু হয় সে মোক্ষ পায়।  এ কারণেই প্রতি বছর সারা বিশ্বের মানুষ এখানে আসেন প্রাণ উৎসর্গ করতে।  অনেক লোক যারা হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী, যারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বা বিদেশে মারা যায়, তাদের হাড়ও বেনারসে এনে গঙ্গায় ডুবিয়ে দেওয়া হয়।  হিন্দু ধর্ম অনুসারে, যদি কোনও ব্যক্তির অস্থি বেনারসে এনে গঙ্গায় প্রবাহিত করা হয়, তবে সে মোক্ষ লাভ করে।

 বারাণসীর ঘাট :

 বারাণসীর আশেপাশের সমস্ত জেলায়, বেশিরভাগ মৃতদেহ তাদের আত্মীয়রা বারাণসীতে নিয়ে যায়।  এখানেই তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।  এই সব হয় পরিত্রাণের জন্য।  একের পর এক মরদেহ আসতে থাকে।  বারাণসীতে মোট ৮৪টি ঘাট রয়েছে।  বারাণসী সম্পর্কে বলা হয় যে সারা বিশ্বে যে স্থান পায় না সে বারাণসীতে স্থান পায়।  এখানকার ঘাটে, অগণিত সাধু এবং রাত্রি যাপনকারী লোকদের দেখা যায় যাদের ভগবান শিব ছাড়া এই পৃথিবীতে কেউ নেই।