এদেশে এমন অনেক অনন্য গ্রাম রয়েছে যেগুলির কথা শুনে অবাক হতে হয়। এই গ্রামের মানুষদের বিদেশে যেতে ভিসা ও পাসপোর্টেরও প্রয়োজন হয় না। এটা কোনও একদিনের ব্যাপার নয়, প্রতিদিনই হয়। চলুন এটি কোথায় জেনে নেই-
নাগাল্যান্ড রাজ্যের লংওয়া নামের গ্রামের মানুষ প্রতিদিন বিদেশ ভ্রমণ করে থাকে। এই গ্রামের সীমান্ত এদেশে ও মায়ানমারের সাথে। গ্রামের অর্ধেক এদেশে আর বাকি অর্ধেক মায়ানমারে। এছাড়াও এই গ্রামে আরও অনেক বিশেষ জিনিস রয়েছে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে এখানে একটি নিষ্ঠুর প্রথা চলে আসছে, যেখানে গ্রামের লোকেরা তাদের শত্রুদের শিরশ্ছেদ করত। যদিও এই হিংসাত্মক প্রথা ১৯৪০ সালে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করা হয়ে যায়।
লংওয়া গ্রাম নাগাল্যান্ডের মোন জেলায় অবস্থিত। এই এলাকাটি ঘন বনভূমি এবং মায়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন। একে এদেশের শেষ গ্রামও বলা হয়। ১৯৬৯ সাল থেকে এখানে আর মাথা শিকারের ঘটনা আর দেখা যায়নি।
এই গ্রামে বসবাসকারী মানুষের জীবনধারা একটি আদিবাসী সমাজের মতো, যারা এখনও পর্যন্ত বংশের ঐতিহ্য অনুসরণ করে আসছে। এখানে বসবাসকারী কোয়াঙ্ক উপজাতি সমাজ 'হেড হান্টার' নামেও পরিচিত। বংশের শক্তি প্রসারিত করতে, তারা তাদের শত্রুদের আক্রমণ করে তাদের শিরচ্ছেদ করতো ।
লক্ষণীয় বিষয় হল, দেশভাগের সময়, কর্তৃপক্ষ এই গ্রামের জন্য কিছু বিশেষ নিয়ম বেঁধে দিয়েছিল, যাতে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত রেখা এই গ্রামের মাঝখান দিয়ে চলে যাবে, তবে গ্রামের মানুষদের উপর এর প্রভাব পড়বে না।
এই গ্রামের মধ্য দিয়ে যাওয়া মায়ানমার-ভারত সীমান্তে নির্মিত সীমান্ত পিলারে একদিকে হিন্দিতে বার্তা লেখা হয়েছে, অন্যদিকে বার্মিজ ভাষায় বার্তা দেওয়া হয়েছে। বার্মিজ মায়ানমারের সরকারী ভাষা।
আমরা যদি কয়ঙ্কা আদিবাসীদের কথা বলি, এখানে মেয়ে জামাই প্রথা প্রচলিত, যার মানে এই গ্রামের লোকেরা একাধিক বিয়ে করতে পারে। এছাড়াও এই গ্রামের মানুষের সাথে সম্পর্কিত আরেকটি মজার বিষয় হল এখানকার মানুষের কাছে ভারত ও মায়ানমার দু দেশের নাগরিকত্ব রয়েছে।
No comments:
Post a Comment