আধুনিক ভারতের প্রথম মুসলিম নারী শিক্ষিকা ও সমাজকর্মী ফাতেমা শেখ। সোমবার জন্মবার্ষিকীতে জেনে নেওয়া যাক তাঁর সম্পর্কে -
ফুলে দম্পতির দ্বারা ওপেন বালিকা বিদ্যালয়ে সাবিত্রী বাই ফুলের সাথে ফাতিমা শেখ একজন শিক্ষিকার ভূমিকায় ছিলেন। উনিশ শতক ছিল পরিবর্তন ও সংস্কারের শতাব্দী। সমাজের শিক্ষিত, সচেতন মহল তার নিজস্ব উপায়ে সমাজ পরিবর্তনের চেষ্টা করছিল। সেই সময়ে জ্যোতিবা ফুলে, সাবিত্রীবাই, সগুনাবাই, ফাতিমা শেখ, উসমান শেখের মতো ব্যক্তিত্বরা নারী, দলিত ও দরিদ্রদের সাথে শিক্ষার মিশনের সাথে যুক্ত ছিলেন।
ফাতিমা শেখ ১৮৩১ সালের ৯ই জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। ফাতিমা শেখের ভাই উসমান শেখ জ্যোতিবা ফুলের বন্ধু ছিলেন। জ্যোতিবা ফুলের বাবা গোবিন্দরাও যখন তাঁর ছেলেকে সমাজের চাপে অস্পৃশ্য মেয়েদের শিক্ষা দেওয়ার কাজ বন্ধ করতে বললেন, জ্যোতিবা বলেছিলেন, তিনি এই কাজ বন্ধ করবেন না। তখন গোবিন্দরাও রেগে গিয়ে তাঁকে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে বলেন।
জ্যোতিবা একই অবস্থায় সাবিত্রী বাইকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। সে সময় উসমান শেখ ফুলে দম্পতিকে শুধু তার বাড়িতে থাকার জায়গাই দেননি, স্কুল খোলার জন্য তাদের বাড়িও দিয়েছিলেন। সে সময়ে উসমান শেখের বাড়িতে রাতের বয়স্ক শিক্ষার কাজও শুরু হয়। এ বিদ্যালয়ে নারী-পুরুষ একসঙ্গে লেখাপড়া করত।
ফাতিমা শেখ সাবিত্রীবাই ফুলের সাথে আহমেদনগরের একটি মিশনারি স্কুলে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণও নিয়েছিলেন। ফাতিমা শেখ এবং সাবিত্রী বাই লোকের মাঝে গিয়ে তাদের মেয়েদের পড়াতে উদ্বুদ্ধ করেন। এ কাজে তাঁকে সাহায্যও করেছেন কয়েকজন। তবে অধিকাংশ লোক তার বিরোধিতা করেন। ফাতিমা শেখ ফুলে দম্পতির বেশিরভাগ কাজকে সমর্থন করেছিলেন।
১৮৫৬ সালে সাবিত্রীবাই অসুস্থ হয়ে পড়লে তিনি কয়েকদিনের জন্য তার বাবার বাড়িতে যান। সেখান থেকে জ্যোতিবা ফুলেকে চিঠি লিখতেন। সেসব চিঠি থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ফাতেমা শেখ সে সময় বিদ্যালয় পরিচালনার দায়িত্বও গ্রহণ করেন এবং বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষও হন। ১৯০০ সালের অক্টোবরে মারা যান তিনি।
No comments:
Post a Comment