কনৌজ শহর তার সুগন্ধি বা পারফিউমের জন্য পরিচিত। কয়েক দশক ধরে এ শহরে ফুলের তৈরি খাঁটি আতরের ব্যবসা চলে আসছে। কথিত আছে যে এখানকার সুগন্ধি অনেক মুঘল সম্রাটকেও সরবরাহ করা হয়েছিল। এখানে অনেক ঐতিহাসিক এবং ধর্মীয় স্থানও রয়েছে দেখার মতো। চলুন আজ জেনে নেই দেশের সুগন্ধি শহর কনৌজ সম্পর্কে কিছু রোমাঞ্চকর বিষয়-
প্রায় ৬০০ বছর ধরে এখানে সুগন্ধি তৈরিতে দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। ইতিহাস জেনে বলা যায়, কনৌজ পারসিক কারিগরদের কাছ থেকে সুগন্ধি তৈরির এই রেসিপি পেয়েছিল। যাদেরকে মোগল বেগম নূরজাহান বলে ডাকতেন। এই ফার্সি কারিগরদেরকে নুরজাহান গোলাপ ফুল দিয়ে তৈরি বিশেষ ধরনের সুগন্ধি তৈরির জন্য ডেকেছিলেন। তারপর থেকে আজ অবধি একই ভাবে কনৌজে পারফিউম তৈরি হচ্ছে।
কনৌজের তৈরি পারফিউম সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক এবং অ্যালকোহল মুক্ত। এই কারণে, এখানে পারফিউমের সুগন্ধ কিছু রোগের জন্য নিদ্রাহীনতা, দুশ্চিন্তা এবং মানসিক চাপ ইত্যাদির জন্য একটি ওষুধ হিসাবে বিবেচিত হয়।
জনপ্রিয় পারফিউম হল - গোলাপ, বেলা, কেভদা, কেভদা, জুঁই, মেহেন্দি এবং গাঁদা। এ ছাড়া শামামা, শামাম-তুল-আম্বর এবং মুখোশ-আম্বরের মতো কিছু বিশেষ ধরনের পারফিউম রয়েছে। সবচেয়ে মূল্যবান সুগন্ধি হল আদর অউদ, যা আসামের একটি বিশেষ কাঠ 'আসমকিট' থেকে তৈরি করা হয়। এর সাথে জুঁই, খুস, কস্তুরী, চন্দন এবং মাটির আতর এখানে খুব বিখ্যাত।
কথিত আছে কনৌজের মাটিতে এক অন্যরকম গন্ধ থাকে। এখানে মাটি দিয়েও সুগন্ধি তৈরি করা হয়। এই মাটিতে বৃষ্টির ফোঁটা পড়লে এখান থেকে একটা বিশেষ সুগন্ধি আসতে থাকে। তামার পাত্রে এই মাটি থেকে নির্গত সুগন্ধ বেস অয়েলের সাথে মিশিয়ে সুগন্ধি তৈরি করা হয়।
কনৌজে পারফিউম তৈরির ৩৫০ টিরও বেশি কারখানা রয়েছে। এখানকার তৈরি সুগন্ধি বিশ্বের ৬০টিরও বেশি দেশে পাঠানো হয়। এ ব্যবসায় ফুল চাষের সঙ্গে জড়িত রয়েছে ৫০ হাজারের বেশি কৃষক। এ ব্যবসায় ৬০ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এসব পারফিউম যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, দুবাই, সৌদি আরব, ফ্রান্স, ওমান, সিঙ্গাপুরসহ অনেক দেশে পাঠানো হয়।
No comments:
Post a Comment