আকবর ও বীরবলের সম্পর্ক আজও জনপ্রিয়।আকবর ও বীরবলের সম্পর্কের কথা ইরা মুখোতির বই 'দ্য গ্রেট মুঘল'-এ বিশদভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। বীরবল ছিলেন সম্রাট আকবরের প্ৰিয় ও দরবারের অন্যতম নবরত্ন।
তাহলে কেন বলা হয় সম্রাট আকবর বীরবলের মৃত্যুর জন্য দায়ী। বীরবল আকবরের একটি ভুলের কারণে প্রাণ হারান। আসুন জেনে নেই সে সম্পর্কে -
১৮৫৩ সালে আফগানিস্তানের কিছু এলাকা মুঘলদ শাসিত ছিল, কিন্তু সোয়াত ও বাজাউরের কিছু উপজাতীয় বাহিনী আফগানিস্তানে লুটপাট চালায়।
বিষয়টি আকবরের কানে গেলে তিনি তার যোদ্ধা জৈন খান কোকাকে সেনাবাহিনীসহ সেখানে পাঠান। কোকা সমস্যায় পড়লে তিনি আকবরকে চিঠি লিখে সাহায্য চান। এখন আকবরের কাছে সেখানে পাঠানোর দুটি বিকল্প ছিল। ১) আবুল ফয়সাল ও ২) বীরবল। আবুল ফয়জল যেতে চাইলেও, আকবর বীরবলকে বেছে নেন।
বীরবল মনের দিক দিয়ে খুব তীক্ষ্ণ ছিলেন, কিন্তু যুদ্ধশিল্পে তেমন পারদর্শী ছিলেন না। আকবর বীরবলকে ৮ হাজার সৈন্যসহ পাঠান। আকবরের এই সিদ্ধান্ত ছিল তার সবচেয়ে বড় ভুল।
প্রকৃতপক্ষে বীরবল এবং জৈন খান এই দুই নেতার মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয় এবং এরই মধ্যে বীরবলের বিরুদ্ধে ফাঁদ বোনা হয়। তাদের বিশ্বাসঘাতকতা করে কাবুলের ধূসর পাহাড় থেকে নিচে ফেলে দেওয়া হয়েছিল।
আরও কিছু রেফারেন্স-এ বলা আছে যে বীরবল পাথরে চাপা পড়ে মারা গিয়েছিলেন। আদিবাসীরা পর্বত আরোহণে পারদর্শী ছিল, যদিও মুঘল সেনাবাহিনী ছিল না। এমতাবস্থায় বীরবল ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেন।
বালান্দ্রি উপত্যকায় বীরবল যেখানে ক্যাম্প করেছিলেন সেখানে আফগান সেনারা আগেই অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে পাথর ও তীর নিয়ে হামলা চালায়। এ কারণে সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয় এবং বলা হয় এই হামলায় বীরবলও পাথরের নিচে চাপা পড়ে মারা যান।
আকবরের শাসনামলে এটাই ছিল মুঘলদের সবচেয়ে বড় পরাজয়। এই যুদ্ধে বীরবল সহ ৮০০o এরও বেশি মুঘল সৈন্য মারা যায়। তবে বীরবলের মৃতদেহও পাওয়া যায়নি। আকবরনামায় আবুল ফজল লিখেছেন, বীরবলের মৃত্যুর পর সম্রাট ভেঙে পড়েছিলেন।
আকবর বীরবলের মৃতদেহ খুঁজতে কাবুলে যেতে চাইলেও পড়ে যদিও কাবুল যাওয়ার উদ্দেশ্য ত্যাগ করেন তিনি। যেহেতু কেউ তার মৃতদেহ পায়নি, তাই বহুবার এমন গুজব ছড়াতে থাকে যে বীরবল বেঁচে আছেন।
সে সময় আকবর এ ধরনের গুজব শুনে অস্থির হয়ে উঠতেন এবং তার সৈন্যবাহিনী পাঠান বীরবলকে খুঁজতে। কিন্তু বীরবলকে আর পাওয়া যায়নি।
No comments:
Post a Comment