কলকাতার ভবানীপুরে গুজরাটি দম্পতি অশোক শাহ এবং তার স্ত্রী রশ্মিতার নৃশংস খুনের ঘটনায় পুলিশের সন্দেহ, ফ্ল্যাট চুক্তির জের ধরে গুজরাটি দম্পতিকে খুন করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে তার ফ্ল্যাটে আসা খুনিরা অশোক সাহকে বিকট শব্দে টিভি চালিয়ে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পেছন থেকে গুলি করে। অন্যদিকে তার স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
খুনিরা দম্পতির মোবাইলও নিয়ে যায়। বুধবার সকালে, লালবাজারে অবস্থিত কলকাতা পুলিশ সদর দফতর থেকে বলা হয়েছে যে ভবানীপুর থেকে দূরে ধর্মতলার একটি ম্যানহোল থেকে ওই মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ বলছে, এর আঙুলের ছাপ সংরক্ষণ করা হয়েছে এবং কল লিস্টও স্ক্যান করা হচ্ছে। বিশেষ বিষয় হল, ঘটনার দিন গুজরাটি দম্পতির আবাসিক চত্বরে লাগানো সিসিটিভি ক্যামেরাটি কাজ করছিল না। তবে রাস্তার আশপাশে লাগানো শতাধিক ক্যামেরার ফুটেজ দেখছে পুলিশ। পাশের একটি সিসিটিভি ক্যামেরায় কিছু কার্যক্রম দেখা গেছে।
পুলিশ দম্পতির বাড়িতে কর্মরত গৃহকর্মী সহ কয়েকজন আত্মীয়কেও জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। পুলিশ জানিয়েছে যে অশোক শাহকে যে ঘরে গুলি করা হয়েছিল সেই ঘরে খাবার টেবিলে দুটি গ্লাস ভর্তি জল এবং খালি চায়ের কাপ পাওয়া গেছে। যারা অপরাধ করেছে তারা গুজরাটি দম্পতির সঙ্গে পরিচিত ছিল।
হত্যার আগে অশোকের সঙ্গে তাদের অনেক ধস্তাধস্তি ও হাতাহাতি হয়। হত্যার পর বাড়ি থেকে কিছু গহনা ও নগদ ৪০ হাজার টাকা নিয়ে গেছে হত্যাকারীরা। তবে পুলিশকে ফাঁকি দিতে খুনিরা গয়নাটি নিয়ে গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে যাতে ডাকাতির উদ্দেশ্যে খুন বলে ধরা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অশোক সাহ তার ফ্ল্যাট ৬০ লাখ টাকায় বিক্রি করতে রাজি হয়েছেন। এ জন্য তিনি ক্রেতার কাছ থেকে এক লাখ টাকা ডাউনপেমেন্টও নিয়েছিলেন। খুনিরা স্টিলের আলমারিও ভাঙার চেষ্টা করলেও সফল হয়নি তারা। সে কারণেই ধারণা করা হচ্ছে সম্পত্তির লোভে এই দম্পতিকে খুন করা হয়েছে।
লক্ষণীয় যে, ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পুলিশ কমিশনারকে ফোন করে সেখানে যেতে বলেন এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খুনিদের ধরার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে ৭২ ঘন্টা পরেও কলকাতা পুলিশ এখনও রহস্য সমাধান করতে বা কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
No comments:
Post a Comment