শ্রাবন মাসের পঞ্চমীকে নাগ পঞ্চমী বলা হয়। হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, শ্রাবণ মাসের শুক্লপক্ষের পঞ্চমী নাগ পঞ্চমী হিসাবে পালিত হয়। দেশের বিভিন্ন স্থানে নাগপঞ্চমীর দিন সাপের পূজো করা হয়। পঞ্চমীর দিন সাপের পূজো করলে কাল সর্প দোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
এই দিনে সাপকে দুধ ও কলা নিবেদন করা হয়। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের কানপুরে নাগপঞ্চমী পালিত হয় একেবারেই অন্যভাবে। এই দিনে পুতুল পেটানোর একটি অনন্য ঐতিহ্য অনুসরণ করা হয়, যা নিজেই খুব অনন্য।
নাগপঞ্চমীর দিন মহিলারা পুরনো কাপড় থেকে পুতুল বানিয়ে রাস্তার মোড়ে রাখে। তারপর শিশুরা এই পুতুলগুলোকে লাঠি দিয়ে পেটায়। কিন্তু এই ঐতিহ্যের সূচনার পেছনে অনেক গল্প প্রচলিত আছে।
এ প্রসঙ্গে দুটি জনপ্রিয় গল্প রয়েছে:
প্রথম গল্প অনুসারে:
তক্ষক সাপের কামড়ে রাজা পরীক্ষিতের মৃত্যু হয়েছিল। কিছুকাল পর তক্ষকের চতুর্থ প্রজন্মের কন্যা রাজা পরীক্ষিতের চতুর্থ প্রজন্মের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।তিনি বিয়ে করে শ্বশুর বাড়িতে এলে তিনি এক দাসীকে এই গোপন কথা বলেন এবং কাউকে না বলতে বলেন। কিন্তু চা
সেই দাসী সে থাকতে না পেরে অন্য এক মহিলাকে এই কথা বলল। এভাবে কথাটা পুরো শহরে ছড়িয়ে পড়ে। এতে তক্ষকের রাজা ক্ষুব্ধ হন এবং ক্রোধে তিনি শহরের সমস্ত মেয়েদেরকে রাস্তার মোড়ে জড়ো হওয়ার নির্দেশ দেন এবং তাদের পিটিয়ে মেরে ফেলেন। সেই থেকে উত্তরপ্রদেশে এই ঐতিহ্য পালিত।
দ্বিতীয় গল্প অনুসারে:
দ্বিতীয় গল্পটি ভাই বোনের গল্পের সাথে সম্পর্কিত। ভাই ভগবান শিবের প্রবল ভক্ত ছিলেন এবং তিনি প্রতিদিন মন্দিরে যেতেন। মন্দিরে ছেলেটি একটি সাপ দেখতে পায়।
ছেলেটি প্রতিদিন সাপটিকে খাওয়াতে থাকে এবং ধীরে ধীরে দুজনেই প্রেমে পড়ে যায়। এরপর ছেলেটিকে দেখে সাপটি তার মণি ছেড়ে পায়ে জড়িয়ে ধরত।
এমনই এক শ্রাবন মাসে একদিন ভাই-বোন দুজনে মন্দিরে যায়। সাপটি মন্দিরে ছেলেটিকে দেখার সাথে সাথে তার পায়ে জড়িয়ে ধরে। বোন তা দেখে মনে করে যে সাপ তার ভাইকে কামড়াতে যাচ্ছে।
বোনটি ভাইয়ের জীবন বাঁচাতে সাপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। এরপর ভাই পুরো ঘটনা খুলে বললে মেয়েটি কাঁদতে থাকে। তখন লোকেরা এই বিধান হিসেবে বলে, সাপ দেবতার রূপ, তাকে মেরে ফেলাতে শাস্তি দেওয়া হবে, যেহেতু ভুলবশত হয়ে গেছে, তাই সময়ের ব্যবধানে মেয়ের বদলে পুতুলকে মারা হয়।
No comments:
Post a Comment