সব চেষ্টার পরও নিজের চেয়ার বাঁচাতে পারলেন না ইমরান খান। অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটের কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত তিনি কৌশলে চালান, কিন্তু তার পরিকল্পনা সফল হয়নি। জেনে নেওয়া যাক কীভাবে বদলে গেল পুরো ঘটনা?
পাকিস্তানে প্রায় এক মাস ধরে চলা রাজনৈতিক নাটকের অবসান হলো শনিবার গভীর রাতে। বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবে ভোটগ্রহণ হয় এবং ইমরান খান সরকারের বিরুদ্ধে ১৭৪ ভোট পড়ে আর এভাবে ইমরান খানের সরকারের পতন ঘটে।
ভোটের ১ দিন আগে শেষ বল পর্যন্ত খেলার দাবিদার ইমরান খান শেষ বল পর্যন্ত মাঠে ছিলেন, কিন্তু খেলা জেতার পরিবর্তে অন্য কৌশল অবলম্বন করে খেলার গতিপথ পাল্টানোর চেষ্টা করলেও তিনি সফল হন। বিরোধীদের 'গুগলিতে' ক্লিন বোল্ড হলেন।
ডেপুটি স্পিকারের অনাস্থা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার সিদ্ধান্ত এবং রাষ্ট্রপতির বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সুপ্রিম কোর্ট বাতিল করেছিল এবং কেবল বিধানসভাই পুনরুদ্ধার করেনি, অনাস্থা প্রস্তাবের উপরও ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
শনিবার বিধানসভার কার্যক্রম বারবার ব্যাহত হয়। এসবের মধ্যেই হঠাৎ করে দলের নেতাদের বৈঠক ডেকেছেন ইমরান খান।
উপস্থিত ছিলেন বিধানসভার স্পিকার আসাদ কায়সার এবং ডেপুটি স্পিকার কাসিম সুরিও। বৈঠকের ১ ঘণ্টা পর তিনি সংসদে ফিরে বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন।
এরপর বিরোধী দলের নেতাদের উদ্দেশে কায়সার বলেন," আমি ইমরান খানকে ভোট দিতে পারি না। আমাদের ৩০ বছরের পুরনো বন্ধুত্ব" বিরোধীদের এ কথা বলার কয়েক মিনিট পর দুপুর ১২টার দিকে স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার পদত্যাগ করেন। এরপর দুজনেই সংসদ ত্যাগ করেন।
স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের পদত্যাগের পর বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-এন-এর আয়াজ সাদিককে দুপুর ১২টা ১২ মিনিটে বিধানসভার স্পিকার নির্বাচিত করে।
২মিনিট পর অর্থাৎ দুপুর ১২:১৪ টার দিকে ইমরান খানের দল পিটিআই-এর সব সাংসদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। দুপুর ১২টা ১৫ মিনিট থেকে অনাস্থা প্রস্তাবের ওপর ভোটগ্রহণ শুরু হয়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সংসদের কার্যক্রম ২ মিনিটের জন্য বন্ধ হয়ে যায়।
তারিখ পরিবর্তনের কারণে এই বিরতি নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়। দুপুর ১২.৩২ মিনিটে বিধানসভার কার্যক্রম আবার শুরু হয় এবং ইমরান খান সরকারের বিরুদ্ধে ১৭৪টি ভোট পড়ে। এভাবে তার সরকারের পতন হয়।
গভীর রাতে সরকার পতনের পর থেকেই শুরু হয় বিরোধীদের উদযাপন। ইমরান খান নিজের বাড়িতেই ছিলেন। এই সমস্ত ঘটনার মধ্যে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রধান এবং আইএসআই প্রধান তার সাথে দেখা করতে তার বাড়িতে পৌঁছেছেন। তিনজনের মধ্যে অনেকক্ষণ আলাপ হয়। কয়েক ঘণ্টা পর প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন খালি করেন ইমরান খান।
ইমরান খান সরকারের পতনের পর বিরোধীরা এখন সরকার গঠনের জন্য প্রস্তুত। পাকিস্তান মুসলিম লীগ-এনের সভাপতি শাহবাজ শরীফকে বিরোধীরা প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে, তাই শাহবাজই হবেন পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী।
No comments:
Post a Comment