বাম ও কংগ্রেসের ঘর এবারে শূন্য করে তৃনমূলে রাজনৈতিক নেতাদের ঢল। শিলিগুড়িতে অধির চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ কংগ্রেসনেতা সুজয় ঘটকের তৃনমূল যোগদান ঘিরে জোড় জল্পনা। দীর্ঘ তিন বারের প্রাক্তন কংগ্রেস কাউন্সিলর তথা দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসের সম্পাদক সুজয় ঘটকের এবারে ঘাসফুল শিবিরের শরিক হতে চলেছেন। তাঁর তৃণমূলে যোগদান শুধুই সময়ের অপেক্ষা বলছে রাজনৈতিক মহল।
দীর্ঘদিন ধরে কংগ্রেসের তাব্বড় নেতৃত্ব হিসেবে পরিচিত হলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একাধিক সিদ্ধান্তকে যেমন তিনি খোলাখুলি সমর্থন করেছেন ঠিক তেমনি নিজ দল ও নেতৃত্বের ব্যর্থতার কথাও অকপটে প্রকাশ্যে বলেছেন বিভিন্ন সময়তে সুজয় বাবু।তার খোলামেলা স্বভাবে কংগ্রেস জেলা নেতৃত্ব অস্বস্তিতেও পড়েছে। তবে নিজ মত প্রকাশের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের নীতি আর্দশকে সম্মান করলেও জেলা নেতৃত্বদের রাজনৈতিক রণকৌশলের নামে সমঝোতাকে গুরুত্ব দেননি তিনি। এমনকি শিলিগুড়ি পুরনিগমের বাম ও কংগ্রেসের গোপন গাঁটছড়ার বিরুদ্ধেও একাধিকবার সরব হতে দেখা গিয়েছে তাকে।
বিগত পুর নির্বাচনে অশোক মডেলকে সামনে রেখে শিলিগুড়িতে কংগ্রেস ও বামেরা জোট হিসেবে লড়লেও পুরনিগমের বোর্ড বৈঠকে মেয়র অশোক ভট্টাচায্যের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতেও পিছপা হননি তিনি। অসন্তোষের জেরে লাগাতর বেশ কিছু বোর্ড বৈঠকে অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায় তাকে। এবারে তৃনমূল রাজ্যের মসনদে তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতা কায়েমের পর থেকে শিলিগুড়ি পুরনিগমের লাল দুর্গ গুঁড়িয়ে ঘাস ফুল ফুটতে চলেছে তা জলের মতো একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে শহরবাসীর কাছে।
সাম্প্রদায়িক বিজেপির আগ্রাসনকে রুখতে পারে একমাত্র তৃনমূল, ভাজপার প্রতিরোধী দল হিসেবে ঘাস ফুল তা জনগনের পাশাপাশি স্বীকার করছেন বাম কংগ্রেস রাজনৈতিক তাব্বড় নেতৃত্বরা। যার জেরে তৃনমূলের হাত শক্ত করতে শিলিগুড়ি পুর কাউন্সিলর ও দীর্ঘদিনের বিরোধী শিবিরে থাকা তাব্বড় নেতারা তৃনমূল যোগদানের জন্য ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করেছেন। রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর একদিনও সময় নষ্ট না করে পুর নিগমে বোর্ড গড়ার টার্গের স্থির করে দার্জিলিং জেলা তৃনমূল সভাপতি রঞ্জন সরকারের নেতৃত্বে গুঁটি সাজাতে শুরু করেছে জোড়া ফুল।
ইতিমধ্যেই বাম বোর্ডের প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র ও মেয়র পারিষদ সদস্য যোগদান করেছে, কংগ্রেসের প্রাক্তন কাউন্সিলর ও নেতৃত্বরাও যোগ দিয়েছে তৃণমূলে। তৃনমূল সভাপতি সাফ জানিয়েছেন প্রাক্তন বোর্ডের অন্যান্য কাউন্সিলর ও কংগ্রেসী কাউন্সিলরদের প্রত্যেকের সঙ্গেই যোগদানের বিষয়ে কথা হয়েছে।তারা ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি বড় অংশের অন্য রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বরা যোগদান করবেন। তৃনমূলের দলীয় সূত্রে খবর দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সম্পাদক সুজয় ঘটকের সঙ্গে সমস্ত কথা হয়ে গিয়েছে দলের নেতৃত্বদের।
শিলিগুড়ি পুরনিগমের ২৫নাম্বার অর্থাৎ সুজয় বাবুর গড় ওয়ার্ডেই তৃনমূল কাউন্সিলর প্রার্থী পদে তাকে টিকিট দেবে আসন্ন পুর নির্বাচনে সে সিদ্ধান্তও নিয়েছে দল। শহরের তাব্বড় নেতৃত্বের পাশাপাশি ২০১৪ সালে লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। তার দল পরিচালনার ক্ষেত্রে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। যদিও এই পুরো বিষয়ে কংগ্রেসের জেলা সম্পাদক তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর সুজয় ঘটক জানান গৌতম দেব ও প্রয়াত কৃষ্ণ পাল আমার অভিভাবক।
তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। তবে এক্ষুনি দল বদলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেইনি। তিনি বলেন বামেরা মুছে গিয়েছে আর পদ্ম চাষের জন্য বাংলার মাটিতে সম্ভব নয় তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে।তৃনমূলের অনেকেই আছেন যারা ভালো বন্ধু। প্রত্যেকের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে। যদিও দার্জিলিং জেলা তৃনমূল সভাপতি রঞ্জন সরকার বলেন সবাই দলে আসবে তবে এখনও যোগদানের দিন নির্ধারিত হয়নি। কথা চলছে। সেক্ষেত্রে বাম ও কংগ্রেস প্রাক্তন কাউন্সিলরদেরই নজর রেখেই এগোচ্ছি। প্রত্যেকের সঙ্গেই কথা চলছে। সম্প্রতি প্রচুর নেতৃত্বদের নিয়ে যোগদান হবে।
No comments:
Post a Comment