১৩০০ বছরের পুরনো এই মন্দির, জেনে নিন এর ইতিহাস
মৃদুলা রায় চৌধুরী, ২৮ এপ্রিল : প্রতিটি রাজ্যে অনেক দেব-দেবীর মন্দির রয়েছে। যা সেই রাজ্যের সংস্কৃতিকে দেখায় এবং প্রতিটি মন্দিরেরও রয়েছে নিজস্ব স্বতন্ত্র বিশেষত্ব। একইভাবে, দক্ষিণ ভারতের বেশিরভাগ মন্দির তাদের বিশেষ স্থাপত্যের কারণে শুধু দেশেই নয়, সারা বিশ্বে বিখ্যাত। দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরমের কৈলাশনাথর মন্দিরটি এই ধরনের স্থাপত্যের একটি দুর্দান্ত উদাহরণ। একে কাঞ্চিপুরমের রত্ন বলা হয়।
কাঞ্চিপুরম হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অন্যতম পবিত্র স্থান হিসেবে বিবেচিত হয়। এই শহরকে মন্দিরের শহরও বলা হয়। কৈলাশনাথর মন্দির ভগবান শিবের উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত। এই মন্দিরটি ভগবান শিব, ভগবান বিষ্ণু, দেবী, সূর্য, গণেশ এবং কার্তিকেয়ের পূজার জন্য নির্মিত হয়েছিল। কাঞ্চিপুরমের এই মন্দিরগুলির মধ্যে কৈলাসনাথ মন্দির রয়েছে যাকে কাঞ্চিপুরমের রত্ন বলা হয়। এই মন্দিরটি প্রায় ১৩০০ বছরের পুরনো এবং এখানে যারা আসেন তারা এই মন্দিরের কাঠামো দেখে মুগ্ধ হন।
৮টি তীর্থস্থানের ঝলক দৃশ্যমান:
কৈলাসনাথ মন্দিরের কাঠামো স্থাপত্যের একটি চমৎকার নিদর্শন। এই মন্দিরের এই বিশেষত্ব একে অন্য মন্দির থেকে আলাদা করে তোলে। প্রত্নতাত্ত্বিকদের ধারণা, পাথরের টুকরোগুলোকে একত্র করে এই মন্দিরটি তৈরি করা হয়েছে। এই মন্দিরের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হল মূল মন্দির চত্বরে ৫৮টি ছোট মন্দির তৈরি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, মন্দিরের প্রবেশপথে দেয়ালে রয়েছে ৮টি তীর্থস্থান। যার মধ্যে দুটি প্রবেশপথের বাম দিকে এবং ৬টি ডান পাশে রয়েছে। এই মন্দিরের গর্ভগৃহের উপরে দ্রাবিড় স্থাপত্যে একটি বিমান নির্মিত হয়েছে। গর্ভগৃহে গ্রানাইটের তৈরি একটি বিস্ময়কর এবং বিশাল শিবলিঙ্গ স্থাপন করা হয়েছে। গর্ভগৃহের চারপাশের দেয়ালে লিঙ্গোদ্ভব, উর্ধ্ব তান্ডব মূর্তি, ত্রিপুরান্তক এবং ভগবান শিবের হরিহরের মতো রূপ খোদাই করা আছে।
কাঞ্চিপুরমের কৈলাসনাথ মন্দিরটি ভগবান শিবের উদ্দেশ্যে উত্সর্গীকৃত, তাই প্রতি সোমবার ভক্তরা এখানে শিবের দর্শন পেতে আসেন, এর সাথে শ্রাবণ এবং মহাশিবরাত্রি মাসে প্রচুর ভিড় দেখা যায়। এছাড়াও অন্যান্য অনেক উৎসবের সময় এখানে ভক্তদের মেলার আয়োজন করা হয়, তবে আধ্যাত্মিক দৃষ্টির পাশাপাশি শিল্প ও প্রত্নতত্ত্বের প্রতি আগ্রহী মানুষরাও এই মন্দিরে আসেন।
No comments:
Post a Comment