বাংলার জেলে ৬২ শিশুর জন্ম, নতুন তথ্য প্রকাশিত
নিজস্বসংবাদদাতা, কলকাতা, ২০ ফেব্রুয়ারী : বাংলার কারাগারে কথিত যৌন হয়রানি, গর্ভাবস্থা এবং মহিলা বন্দীদের প্রসবের বিষয়ে একটি নতুন তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। কারাগারে প্রসব হওয়া ৬২ জন নারীর মধ্যে ১১ জন বাংলাদেশি নারী রয়েছেন বলে জানা গেছে। রাজ্য সরকার এই নারীদের সন্তানসহ বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়েছে। ২০১৮ সালে একটি জনস্বার্থ মামলার মাধ্যমে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। এরপর সুপ্রিম কোর্ট মামলার তদন্তের জন্য অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ করেছিল।এখন আদালতে অ্যামিকাস কিউরির রিপোর্ট দাখিল করা হয়েছে।
২০১৮ সালে, বিচারপতি তাপস ভাঞ্জ সুপ্রিম কোর্টে একটি রিপোর্ট দিয়েছিলেন। বলা হয়, শিলিগুড়ি জেলে নারীদের যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটছে। এ কারণে এ কারাগারে নারী বন্দিরা গর্ভবতী হচ্ছে এবং কারাগারে সন্তান জন্ম নিচ্ছে। এই রিপোর্টকে গুরুত্ব সহকারে নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট মামলার তদন্তের দায়িত্ব অ্যামিকাস কিউরি গৌরব আগরওয়ালকে দিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী পুরো বিষয়টি তদন্ত করে সুপ্রিম কোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন আইনজীবী।
অ্যাডভোকেট গৌরব আগরওয়াল তার প্রতিবেদনে এই সত্যটি স্বীকার করেছেন যে মহিলারা গর্ভবতী ছিলেন এবং জেলের মধ্যেই প্রসব হয়েছিল। তবে, তিনি সুপ্রিম কোর্টে যুক্তি দিয়েছেন যে এই মহিলারা কারাগারের ভিতরে গর্ভবতী ছিলেন এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি তার প্রতিবেদনে লিখেছেন, বিভিন্ন কারাগার থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। গ্রেপ্তারের সময় অনেক মহিলা ইতিমধ্যেই গর্ভবতী ছিলেন বলে জানা গেছে। তাই জেলের ভেতরেই তাদের ডেলিভারি হয়েছে, একইভাবে জেলে থাকা অবস্থায় অনেক নারীকে প্যারোল দেওয়া হয়েছে। এমন অবস্থায় জেল থেকে বের হয়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন তিনি।
প্রসবের আগেই তাদের প্যারোলের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় তার ডেলিভারিও জেলের ভেতরেই হয়। এভাবে ২০১৮ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত জেলে মোট ৬২ জন নারীর প্রসব হয়েছে। তিনি জানান, কারাগারে গর্ভাবস্থায় এসব নারীর চিকিৎসা ও খাবারের ব্যবস্থা করেছে কারা প্রশাসন। কারাগারের নথিতেও এর সম্পূর্ণ বিবরণ লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। তিনি তার প্রতিবেদনে স্পষ্ট করেছেন যে, কারাগারে থাকাকালীন একজন নারী বন্দীর গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা নগণ্য। এর কারণ হলো, কারাগারে নারী ও পুরুষ বন্দীদের আলাদা ব্যারাকে রাখা হয়।
No comments:
Post a Comment