জানেন কী ভোলানাথ কীভাবে তৃতীয় নয়ন পেয়েছিলেন?
মৃদুলা রায় চৌধুরী, ২০ অগাস্ট : মহাদেবকে বলা হয় জগতের রক্ষক, যাকে খুশি করা সবচেয়ে সহজ। যে ভক্ত ভোলেনাথের পূজো করেন, শিব শঙ্কর তাঁর হয়ে যান। মহাদেব দয়ালু, করুণায় পূর্ণ। কিন্তু ভোলনাথের অন্য রূপও আছে। তিনি যখন উগ্র রূপে আসেন, তখন সারা বিশ্বে হৈচৈ পড়ে যায়। তাঁর এই রূপের কারণে তিনি রুদ্র নামেও পরিচিত। ভগবান যখনই উগ্র রূপে আসেন, তখনই তাঁর তৃতীয় চোখ খুলে যায়। কিন্তু জানেন কী এই তৃতীয় চোখের রহস্য? চলুন জেনে নেওয়া যাক কীভাবে ভোলেনাথ এই তৃতীয় নয়ন পেয়েছেন এবং এর রহস্য কী-
শাস্ত্র মতে, পৃথিবীতে যখনই কোনো সংকট আসে, অত্যাচার বাড়ে, ধ্বংস ঘনিয়ে আসে, তখনই ভোলেনাথের তৃতীয় চোখ খুলে যায়। এটি হল ভোলেনাথের উগ্র রূপ। ভোলেনাথের এই তৃতীয় নয়নটি তাঁর দুই ভ্রুর মাঝখানে কপালে দেখা যায়, যার কারণে তিনি ত্রিনেত্রধারী ও ত্রিলোচন নামেও পরিচিত। কথিত আছে যে মহাদেব তার তৃতীয় চোখ দিয়ে সবকিছু দেখতে পান যা সাধারণত দেখা যায় না।
মহাদেবের তৃতীয় চোখ কী নির্দেশ করে:
অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ মিশে গেছে তার তিন চোখে। বিশ্বাস অনুসারে, এই তিনটি চোখ স্বর্গলোক , মৃত্যুলোক এবং পাতালেরও প্রতিনিধিত্ব করে। মহাদেবের তৃতীয় নয়নও একটি বিশেষ ইঙ্গিত দেয়। এটা বিশ্বাস করা হয় যে যখনই ভোলেনাথ তার তৃতীয় চোখ খোলেন তখনই একটি নতুন যুগ শুরু হয়।
কীভাবে মহাদেব তৃতীয় চোখ পেলেন:
বিশ্বাস অনুসারে, ভগবান শিব হিমালয় পর্বতে একটি সভার আয়োজন করছিলেন। সেখানে হঠাৎ মা পার্বতী এসে শিবের দুই চোখে হাত দিয়ে ঢেকে দেন। তিনি এই কাজটি করার সাথে সাথে পুরো মহাবিশ্বকে অন্ধকারে ঢেকে গেল। সূর্যের আলো অদৃশ্য হয়ে গেল এবং চারিদিকে হইচই পড়ে গেল। প্রাণীরা এদিক ওদিক দৌড়তে থাকে। সৃষ্টি দ্রুত ধ্বংসের দিকে যেতে থাকে। পৃথিবীর রক্ষক ভোলেনাথ এই অবস্থায় কিছু দেখতে না পেয়ে তার কপালে আলোর রশ্মি জ্বলে ওঠে।
এই জ্যোতিপুঞ্জ খোলার সাথে সাথে পুরো ঘর আবার আলো হয়ে যায় এবং সবকিছু আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে যায়। এই আলোর রশ্মিকে বলা হত মহাদেবের তৃতীয় চোখ। পরে মা পার্বতী ভোলেনাথের কাছে তৃতীয় চোখের রহস্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার চোখই পৃথিবীর অভিভাবক। এমতাবস্থায় তিনি তৃতীয় নয়ন প্রকাশ না করলে পৃথিবীর ধ্বংস নিশ্চিত ছিল।
No comments:
Post a Comment