শাশুড়ি- বৌমা নামে পরিচিত দুটি নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত এই শিবলিঙ্গ
মৃদুলা রায় চৌধুরী, ১৮ আগস্ট : কোটা বিভাগের ঝালাওয়ার জেলার রাতলাইতে অবস্থিত এমন একটি মন্দিরের গুরুত্ব যা নিজের মধ্যেই বিস্ময়কর। ধর্ম ও বিশ্বাসের দিক থেকে এই মন্দিরটি খুবই বিখ্যাত।ভালতা সড়কে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে মেলকি গ্রামের পাশে প্রাচীন গোরেশ্বর মহাদেব মন্দিরটি রয়েছে। এ কারণে শহর থেকে দূরে থাকার পরও অনেক ভক্ত জল দিতে ও পূজো করতে আসেন। সারা বছর এই মন্দিরে অবারিত শিখা জ্বলতে থাকে। বিশেষ বিষয় হল উজাড় (স্থানীয় লোকদের মতে) শাশুড়ি- বৌমা নামে পরিচিত দুটি নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত। দুটি নদীর সঙ্গমের কারণে মন্দিরটি সম্মেল (সমের) মহাদেব নামে বিখ্যাত। সঙ্গমস্থল হওয়ায় শেষকৃত্যের পর এখানে নদীতে অস্থি ভাসানো হয়। শিবালয় শিলালেখ অনুসারে, এই মন্দির ৮০০ বছরেরও বেশি পুরানো।
বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গ একটি বড় পাথরের উপর নির্মিত:
গোরেশ্বর মহাদেব মন্দিরের দ্বিতীয় তলায় একটি অলৌকিক দ্বাদশ জ্যোতির্লিঙ্গ রয়েছে যা একটি বড় পাথরের উপর রতলাইয়ের প্রয়াত কারিগর মথুরা লাল বিশ্বকর্মা তৈরি করেছিলেন।এটি এলাকায় বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গ সহ একমাত্র মন্দির।বারোটি জ্যোতির্লিঙ্গের মূর্তিটি অনন্য।
গোরেশ্বর মহাদেব, গণেশ, কার্তিকেয়, মাতা পার্বতী এবং ভগবান বিষ্ণুর চতুর্ভুজ মূর্তি মন্দিরে স্থাপিত। সবুজের মাঝে নদীর তীরে অবস্থিত মহাদেব মন্দিরে ভক্তদের ভিড় লেগেই থাকে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, কয়েক বছর আগে এখানে একটি বিশাল শিবলিঙ্গ ছিল, যা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধ্বংস হয়ে যায়। গভীর বিশ্বাসের কারণে দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা এখানে আসেন পূজো করতে। প্রাচীন মন্দিরের নিচতলায় শিবলিঙ্গ, নন্দী, পার্বতী, নাগ দেবতার মূর্তি রয়েছে।
গোরেশ্বর মন্দির চত্বরে ধর্মশালা নির্মাণের সময় খনন করা ভিত্তি থেকে প্রাচীন শিবলিঙ্গ, পিন্ড, নন্দী, নটরাজ এবং অনেক খণ্ডিত মূর্তি পাওয়া গেছে। সেখানে গম্বুজ ও পাথরও পাওয়া গেছে। অনেক মূর্তি ভাঙা হয়েছে। এই প্রাঙ্গণে মন্দির কমিটি ও ভক্তরা হনুমান, গণেশ, সরস্বতীসহ বহু দেব-দেবীর মূর্তি স্থাপন করেছেন।
জনপ্রিয় পিকনিক স্পট:
ধর্মীয় বিশ্বাসের পাশাপাশি মন্দির চত্বরে রান্নাঘর, ধর্মশালা, ছায়া, জলের সুব্যবস্থা রয়েছে। শিশুদের জন্য রয়েছে বিনোদনের ব্যবস্থা। এ কারণে লোকজন এখানে পিকনিক করতে আসে।এর পাশাপাশি এখানে কাঁচা রান্নাঘরও তৈরি করে থাকে লোকজন। মন্দির কমিটির পক্ষ থেকে রান্নার জন্য বাসনপত্রও পাওয়া যায়।
No comments:
Post a Comment