চন্দ্র দোষ দূর হয়, এই মন্দিরে পূজো দিলে
মৃদুলা রায় চৌধুরী, ০৮ জুলাই : সনাতন ধর্মে, ভগবান মহাদেবের মন্দিরে জ্যোতির্লিঙ্গের পূজোকে বিশেষ গুরুত্ব হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, দেশের ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের মধ্যে একটি সোমনাথ জ্যোতির্লিঙ্গকে পৃথিবীর প্রথম জ্যোতির্লিঙ্গ হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এখানে একটি পবিত্র পুকুরও রয়েছে যা সোমকুন্ড নামেও পরিচিত। এই মন্দিরের বিশ্বাস এটি প্রতিটি যুগে এখানে উপস্থিত থাকে।ভগবান শিবের এই পবিত্র দিব্য জ্যোতির্লিঙ্গের বর্ণনা স্কন্দপুরাণ, শ্রীমদ ভাগবত গীতা, শিব পুরাণ ইত্যাদি সমস্ত ধর্মীয় গ্রন্থে পাওয়া যায়।
পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, গুজরাটের সৌরাষ্ট্রে অবস্থিত সোমনাথ মন্দিরে স্থাপিত জ্যোতির্লিঙ্গ হল প্রথম রুদ্র জ্যোতির্লিঙ্গ, যেখানে প্রতিটি ইচ্ছে পূরণ হয়। এখানে আসা শিব ভক্তদের সকল কষ্ট দূর হয়ে যায়।
পুরাণ অনুসারে, প্রাচীনকালে দক্ষ প্রজাপতি তার ২৭ জন কন্যাকে চন্দ্রদেবের সাথে বিবাহ করেছিলেন। কিন্তু চন্দ্রদেবতা তার একমাত্র কন্যা রোহিণীকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছিলেন। অন্যদিকে, দক্ষ চন্দ্র দেবকে বোঝানোর চেষ্টা করে, কিন্তু চন্দ্র দেব তার কথা না শুনলে রাজা দক্ষ তাকে ক্ষয় রোগ হওয়ার অভিশাপ দেন। এতে বিচলিত হয়ে চন্দ্রদেব ব্রহ্মদেবের কাছে যান। ব্রহ্মদেব এই কথা জানতে পেরে বললেন, এই কুষ্ঠরোগ থেকে একমাত্র মহাদেবই মুক্তি পেতে পারেন।
এ জন্য তাদের আরব সাগরে স্নান করে ভোলেনাথের পূজো করতে হবে। এই কথা শুনে চন্দ্রদেব তৎক্ষণাৎ কঠোর তপস্যা করেন, যার ফলে মহাদেব তাঁকে রাজা দক্ষের অভিশাপ থেকে মুক্তি দেন। এরপর চন্দ্রদেব ভোলেনাথের বিশাল মন্দির তৈরি করেন। সেই জ্যোতির্লিঙ্গের নাম ছিল সোমনাথ। এছাড়া পূর্বপুরুষদের শ্রাদ্ধের জন্যও এই তীর্থস্থান খুবই বিখ্যাত।
জ্যোতিষ শাস্ত্র অনুসারে, যদি কারো জন্ম তালিকায় চন্দ্র দোষ থাকে। তখন চন্দ্রের অশুভ প্রভাব দূর করতে সোমনাথ জ্যোতির্লিঙ্গের পূজো করা হয়। এই পূজো করলে চন্দ্র দোষ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শিবের সাথে চাঁদের আশীর্বাদও প্রাপ্ত হয়। এর পাশাপাশি মানসিক রোগ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
No comments:
Post a Comment