আগ্রা ফোর্টের ইতিহাস
ব্রেকিং বাংলা ন্যাশনাল ডেস্ক, ২৪ জুলাই :আগ্রার তাজমহল বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের মধ্যে গণনা করা হয়। তাজমহলের পরে আগ্রা দুর্গও এমন একটি স্থাপনা যা পর্যটকদের সবচেয়ে বেশি আকর্ষণ করে। এটি বিস্ময়কর ইন্দো-ইসলামিক স্থাপত্যের একটি চমৎকার উদাহরণ, যা অন্যান্য অনেক দুর্গের মতোই তার নিজস্ব আকর্ষণীয় ঐতিহাসিক গল্পে পূর্ণ। চলুন জেনে নেই আগ্রা ফোর্টের ইতিহাস সম্পর্কে-
শাহজাহান পুনর্গঠন করেছিলেন:
আগ্রা ফোর্ট শাহজাহান নির্মাণ করেছিলেন। সাদা মার্বেল জিনিসের প্রতি তার বিশেষ অনুরাগ ছিল, তাই তিনি এই দুর্গের প্রথম স্থাপনা ভেঙ্গে পুনর্নির্মাণ করেন। এতে মার্বেলও ব্যবহার করা হয়েছিল এবং আজও ওই দুর্গে মার্বেলের সুন্দর কাজ দেখতে পাবেন।
একটি মন্দিরও আছে:
এই দুর্গটি ইসলামী স্থাপত্যের একটি চমৎকার উদাহরণ, তবে এখানে একটি বিশেষ বিভাগও রয়েছে, যা হিন্দুদের জন্য নির্মিত হয়েছিল। শাহজাহানের স্ত্রী যোধা বাই হিন্দু ধর্মের অনুসারী ছিলেন, তার ভালোবাসা ও সমর্থনের কথা মাথায় রেখে শাহজাহান হিন্দুদের সমান অধিকার ও সম্মানের সাথে দুর্গে স্থান দেন এবং সেখানে মন্দির নির্মাণ করা হয়।
দরজায় তেল ঢেলে দেওয়া হয়:
আগ্রার প্রবেশদ্বারে, একটি বিশেষভাবে তৈরি পথ পাওয়া যায়, যা দুর্গের মূল কমপ্লেক্সের দিকে নিয়ে যায় এবং এই পথটি প্রায় ৬০ ডিগ্রি বাঁকানো। এটি বাঁকানোর প্রধান কারণ ছিল শত্রুদের থামানো। এভাবে শত্রু, হাতি ও ঘোড়া প্রবল সম্ভাবনা নিয়ে ভেতরে ঢুকতে পারত না। সেই সঙ্গে দরজায় প্রচুর গরম তেলও ঢেলে দেওয়া হয় যাতে প্রবেশ গেটে জ্যাম তৈরি হয়। এটি ছিল বিজ্ঞান ও স্থাপত্যের একটি বড় উদাহরণ।
দুর্গে প্রিমিয়াম বেলেপাথর স্থাপন করা হয়েছে:
দুর্গের অধিকাংশই ছিল লাল বেলেপাথর দিয়ে তৈরি এবং আকবর এতে অনেক অবদান রেখেছিলেন। তিনি লাল দেয়াল এবং বেলেপাথর দিয়ে তৈরি স্থাপত্যকে উৎসাহিত করেছিলেন। দুর্গ নির্মাণের জন্য তিনি উত্তর ভারতে ছড়িয়ে থাকা কোয়ারি থেকে ৪ হাজারেরও বেশি প্রিমিয়াম বেলেপাথর কিনেছিলেন।
কোহিনূরকে এখানে রাখা হয়েছিল:
মুঘল শক্তি দুর্বল হওয়ার পর, আগ্রা ফোর্টটি বেশ কয়েকটি রাজবংশের দ্বারা লুণ্ঠিত হয়েছিল। শাহজাহানের বিখ্যাত ময়ূর সিংহাসন ও কোহিনূর হীরাও এখানে রাখা ছিল। কিন্তু পারস্যের এক শাসক নাদির শাহ দুর্গ আক্রমণ করে সিংহাসন লুট করে। এরপর কোহিনূর এদেশ থেকে পারস্যে এবং অবশেষে ব্রিটিশদের কাছে চলে যায়।
দুর্গে এই স্থানগুলো বিশেষ:
আগ্রা ফোর্টে জাহাঙ্গীর মহল, খাস মহল মুসাম্মান বুর্জ, শীশ মহল, নাগিনা মসজিদের মতো অনেক ঐতিহাসিক ভবন রয়েছে যা পর্যটকদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করে। দুর্গের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ভবন 'শীশ মহল' হল একটি ড্রেসিং রুম, যেখানে ছোট আয়নাগুলি খুব সুন্দরভাবে সজ্জিত ছিল।
No comments:
Post a Comment