নির্বাচন কমিশন নিল এই পদক্ষেপ
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ১১ জুন : বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে ক্রমাগত বাড়ছে সহিংসতা। রাজ্য নির্বাচন কমিশন এই বিষয়ে প্রতিটি জেলা প্রশাসনকে সতর্ক করেছে। এ বিষয়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার এবং কমিশনারদের কাছে বিস্তারিত নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও, পঞ্চায়েত নির্বাচনী প্রচারের বিষয়ে রাজ্য পুলিশকে ১৬ দফা নির্দেশনার সাথে মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়ার ভিডিওগ্রাফি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতবারের সহিংসতার নজির উল্লেখ করে ইতিমধ্যেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা হয়েছে। যার জেরে বিজেপি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের অনুরোধ করেছে। আগামীকাল সোমবার কমিশন এ বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দেবে। এ অবস্থায় কমিশনের এই নির্দেশনা গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা।
নির্বাচন নিয়ে শুক্রবার জেলা প্রশাসনের কাছে নির্দেশনা পাঠায় কমিশন। তবে কিছু পর্যবেক্ষকের প্রশ্ন, শুধু ভোটগ্রহণের সময়ের কথা মাথায় রেখে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মনোনয়ন পর্ব শুরুর পর থেকেই জেলায় অস্থিরতা শুরু হয়েছে, তা আগে মোকাবেলা করা হচ্ছে না কেন?
প্রচার অভিযান চলাকালে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ এবং মোটরসাইকেল-সাইকেল মিছিল বের করার কথা থাকলেও অনুমোদনের পুরো বিষয়টি স্থানীয় থানার ওসির ওপর কীভাবে ছেড়ে দেওয়া হলো তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিরোধীরা অনেক ক্ষেত্রে পুলিশের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছে। নির্বাচনী প্রচারণার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও সহিংসতা প্রতিরোধে নির্দেশিকায় কেন কোনো জোরালো বার্তা নেই তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
ভোটের মনোনয়ন পর্বের শুরু থেকেই জেলায় জেলায় অস্থিরতা চলছে। ঊর্ধ্বতন আধিকারিকদের মতে, নির্বাচন ঘোষণার আগে কমিশন প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেছে। তবে কমিশন সূত্রের দাবি, দুই-তিন মাস আগে থেকেই এর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। তাই অভাবের অভিযোগ সঠিক নয়। এ দিনও, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মুর্শিদাবাদ সহ কয়েকটি জেলার আধিকারিকদের সাথে কথা বলেছেন এবং মনোনয়ন প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালনা করার নির্দেশ দিয়েছেন।
ভোটারদের আস্থা পুনরুদ্ধার করতে কমিশন প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে যেন প্রত্যেক ভোটার যেন কোনো ঝামেলা ছাড়াই ভোটকেন্দ্রে পৌঁছায়। নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। সব দলের নির্বাচনী এজেন্টদের ভোটের দিন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।
কমিশন জানায়, অস্ত্র উদ্ধার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, ভোটারদের আস্থা বাড়ানোর ওপর বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধারে জেলা পর্যায়ে ‘স্ক্রিনিং কমিটি’ গঠনের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। কমিশন এও জানিয়েছে যে প্রতিদিনের রিপোর্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার এবং পুলিশ কমিশনার আইনশৃঙ্খলা কমিশন, স্বরাষ্ট্র সচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজিকে পাঠাবেন। এতে অস্ত্র, গুলি, বিস্ফোরক উদ্ধার, অপরাধীদের গ্রেফতার, হতাহতের সংখ্যা, আহতদের শনাক্তকরণ এবং সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি, পুলিশি পদক্ষেপ রেকর্ড করা উচিৎ।
No comments:
Post a Comment