এই লিচু এবার পাওয়া যাবে না, জেনে নিন এর পেছনের কারণ
ব্রেকিং বাংলা ন্যাশনাল ডেস্ক, ২৪ মে : বিহারের লিচুপ্রেমীদের জন্য দুঃসংবাদ। এই বছর তারা মুজাফফরপুরের সুস্বাদু শাহী লিচু সময়মতো খেতে পারবেন না, কারণ ভালো মানের লিচু এখনও বাজারে আসেনি। এবার আবহাওয়ার পরিবর্তনের প্রভাব পড়েছে লিচুর গুণমানের পাশাপাশি ফলনেও। এ কারণে লিচুর ফলনে অনেক ক্ষতি হয়েছে।
দেশে লিচুর সবচেয়ে বেশি চাষ হয় বিহারে। প্রায় ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ লিচু বিহার থেকে অন্যান্য রাজ্যের পাশাপাশি বিদেশে রপ্তানি করা হয়। তবে এবার তাপমাত্রার বড় পার্থক্যের কারণে এখন পর্যন্ত ভালো মানের লিচু বাজারে আসতে পারেনি। প্রতি বছর ১৫ মে নাগাদ লিচু বাজারে আসত। বিহার লিচু অ্যাগ্রোঅ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বাচ্চা প্রসাদ সিং বলেছেন, এবার আবহাওয়ার পরিবর্তনে লিচু চাষিরা অবাক হয়েছেন। শুরুতে লিচু গাছে ভালো ফুল এলেও লাগাতার গরমে ফলগুলো হয় গাছে শুকিয়ে যায় অথবা ফেটে মাটিতে পড়ে যায়।
বাচ্চা প্রসাদ বলেন, কয়েক দশক পর এই অবস্থা দেখা যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রাকৃতিকভাবে পাকা লিচু গাছ থেকে তোলা হয়নি। তিনি জানান, গত বছর এই সময়ে ট্রেন ও এরোপ্লেটের মাধ্যমে প্রতিদিন ৫০ থেকে ১০০ মেট্রিক টন লিচু আহরণ করা হচ্ছে। কিন্তু এবার এই সংখ্যা ১০ টনেও পৌঁছয়নি। এতে কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়েই ক্ষুব্ধ। যদিও কৃষকরা উদ্যান চাষে কঠোর পরিশ্রম করেছেন।
মুজাফফরপুরের সেন্ট্রাল লিচু রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ডিরেক্টর বিকাশ দাস বলেছেন, এবার জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বেশি দেখা যাচ্ছে। প্রাকৃতিক পরিবর্তনের শিকার হয়ে পড়ে লিচু। লিচু পাকার সময় এলেও এখন পর্যন্ত ভালো মানের লিচু পাকেনি। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে এবার লিচু পাকবে ১৫ দিন দেরিতে। লিচুর বিশেষত্ব হলো এটি গাছেই পেকে এবং এর স্বাদ পায়। ভাঙ্গার পর অন্যান্য ফলের মধ্যে স্বাদ ও রঙের পরিবর্তন দেখা যায়। দুর্ভাগ্যবশত, উচ্চ তাপমাত্রার কারণে, এই সময় ফলের মধ্যে কোন পাল্প ছিল না, খুব বেশি রস ছিল না। একই সঙ্গে এবার লিচুর ফলের পরিবর্তন নিয়ে গবেষণা শুরু করেছে বিভাগটি।
মুজাফফরপুরের কান্তির লিচু চাষী বাবলু সিং বহু বছর ধরে জৈব লিচু চাষ করছেন। গত কয়েক বছর ধরে তিনি ভালোই রোজগার করছিলেন। কিন্তু এবারের ফল হতাশ করেছে। তিনি বলেন, এবার খরচও মেটানো হবে না। ফলের আকার ছোট হওয়ায় বর্তমানে শুধু লিচু বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়। তিনি জানান, এবার গাছে মাত্র ৫০ শতাংশ ফল ধরেছে।
No comments:
Post a Comment