কোটি কোটি টাকার দুবাইতে পাঠানোর তথ্য এল সামনে
নিজস্ব প্রতিবেদন, কলকাতা, ২৬ মে : গরু পাচারকারী এনামুল হক, তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল সহ বহু নেতা বর্তমানে জেলে বন্দী।এবার গরু পাচার মামলার তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে। ভুয়ো রপ্তানি নথি তৈরি করে কোটি কোটি টাকা দুবাইতে পাঠানো হয়েছে। শুধু মানি লন্ডারিং নয়, জাল রপ্তানি নথির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা প্রতারণা করা হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের। গরু পাচারকারী এনামুল হকের ৩জন ভাস্তা এ কাজ করেছে। তারা হলেন জাহাঙ্গীর আলম, হুমায়ুন কবির ও মেহেন্দি হাসান।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির ২০১৭ সালের ৩৬ দিনে দুবাইতে ২৩কোটি টাকার কাপড় রপ্তানি হয়েছে। জেএইচএম এক্সপোর্টস মহিলাদের কান্ড রপ্তানিকারক কোম্পানি। আরও রপ্তানির জন্য সরকারের কাছ থেকে প্রণোদনা ভাতা পেয়েছে ৪ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। এই কাপড়ের একটি বড় চালান চেন্নাই বন্দর দিয়ে রপ্তানি করা হয়।
রপ্তানির ধরণ সম্পর্কে সন্দেহের কারণে ডিআরআই ২০১৯ সালে তদন্ত শুরু করে। নভেম্বর ২০১৯-এ, জেএইচএম এক্সপোর্টস-এর কলকাতা অফিস সহ ১১টি স্থানে অনুসন্ধান চালানো হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটির মালিক এনামুলের তিন ভাস্তা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, সরবরাহকারী হিসেবে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর কোনো অস্তিত্বই নেই। চেন্নাই বন্দরে পণ্য পরিবহনের নথিতে উল্লেখিত ট্রাক বা ট্রেলার আসলে ছিল না।
নথিতে দুবাইয়ের 'আল ফারসা' এবং 'ব্লু আইস ট্রেডিং' নামে দুটি কোম্পানির রপ্তানিকারকদের উল্লেখ রয়েছে। ওই দুটি কোম্পানির বাস্তবতার সাথে তাদের কোন সম্পর্ক নেই। গরু পাচারের দিনে নকল রপ্তানির আড়ালে টাকা পাচার হয়েছে বলে দাবি করেছে ইডি।
এছাড়াও এনামুলের ভাস্তারা সরকারের সাথে প্রতারণা করে টাকা চুরি করেছে। ইনামুলের ভাস্তা মেহেন্দি হাসানকে ২০২০ সালে ডিআরআই গ্রেপ্তার করেছিল। রপ্তানি বাবদ সরকারের কাছ থেকে পাওয়া প্রায় ৫ কোটি টাকা প্রণোদনা ভাতা ফেরত দিয়ে জামিনে থাকা অবস্থায় দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন মেহেন্দি হাসান।
সে সময় গরু পাচার মামলায় মেহেন্দি ও এনামুলের তিন ভাস্তার বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করেছিল ইডি। এরপর তিন ভাই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। ইডি দাবি করেছে যে জেএইচএম ভাইরা শীর্ষ রাজনৈতিক দলের নেতাদের দ্বারা সমর্থিত।
গরু পাচারের ক্ষেত্রে, সিবিআই এবং ইডি আধিকারিকরাও বিএসএফের কাছ থেকে যোগসূত্রের খবর পেয়েছিলেন। এরপর বিএসএফের এক শীর্ষ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়। টিএমসি নেতা অনুব্রত মন্ডল, তার মেয়ে সুকন্যা মন্ডল এবং তার দেহরক্ষী সেহগাল হুসেনও বর্তমানে গরু পাচারের অভিযোগে তিহার জেলে রয়েছেন এবং তাদের মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
No comments:
Post a Comment