সাদা বরফে আচ্ছাদিত একটি মহাদেশ, যেখানে কয়েক মাস সূর্যের আলো পৌঁছয় না। এমন একটা জায়গা আছে যেখানে বয়ে চলেছে রক্তাক্ত ঝর্ণা। পৃথিবীর সর্বদক্ষিণে অবস্থিত এই মহাদেশের বেশির ভাগ অংশই তুষারে ঢাকা, কিন্তু সাদা চাদরে ঢাকা এই মহাদেশে অবস্থিত জলপ্রপাতে রক্তাক্ত জল প্রবাহিত হতে থাকে। চলুন গবেষণা কী বলছে জেনে নেই-
এই রক্তাক্ত জলপ্রপাত নিয়ে নানা ভ্রান্ত ধারণা ছড়িয়ে পড়লেও এবার এর রহস্য সামনে এসেছে। যুক্তরাজ্যের ওয়েবসাইট ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইউনিভার্সিটি অব আলাস্কা ফেয়ারব্যাঙ্কসের গবেষকরা রহস্য সমাধানে সফল হয়েছেন। এই জলপ্রপাতটি প্রথম ১৯১১ সালে আবিষ্কৃত হয়েছিল। গবেষকদের মতে, এর বয়স ১.৫ মিলিয়ন বছর।
গবেষকদের মতে, শুরু থেকেই চলমান অক্সিডেশনের কারণে এর রঙ রক্তাক্ত লাল। গবেষকরা বলেছেন যে এর পেছনে কারণ ছিল উপত্যকায় লৌহ উপাদান অর্থাৎ লোহার আকরিকের উপস্থিতি। তাঁরা বলেন, এই লেকে আলো ও অক্সিজেনের প্রবেশ খুবই কম। লৌহ উপাদান সহ তরল বাতাসে উপস্থিত অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসার সাথে সাথে এটি মরচে ধরে এবং জল রক্তাক্ত লাল হয়ে যায়। বছরের পর বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে চলছে এই প্রক্রিয়া।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকে এর আগে প্রকাশিত একটি নিবন্ধ অনুসারে, বিজ্ঞানী এবং অনুসন্ধানকারীদের একটি দল এই পুরো এলাকাটি অধ্যয়ন করেছে। হিমবাহের নীচে, তারা উপ-হিমবাহী নদী এবং উপ-হিমবাহী হ্রদের একটি জটিল নেটওয়ার্ক খুঁজে পেয়েছিল, যা নোনা জলে ভরা ছিল। এই নোনা জলে বেডরক আয়রনের পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। তাদের অক্সিডেশনের কারণে, ঝরনার জল গভীর লাল হয়ে যায়।
এই রক্তপ্রপাতের উচ্চতা একটি পাঁচতলা ভবনের সমান বলে জানা গেছে। আর্থ স্কাই-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গবেষকদের দল গবেষণার পর জানতে পেরেছে যে ব্লাড ফলসের জলে অক্সিজেন নেই, তবে ১৭ ধরনের অণুজীব রয়েছে, যারা সালফেটের ওপর টিকে থাকে এবং সালফেট হ্রাসের মাধ্যমে শক্তি উৎপন্ন করে। এই অণুজীবগুলি খুব জটিল জলবায়ুতে বাস করে, যেখানে অক্সিজেনের অস্তিত্ব নেই।
No comments:
Post a Comment