শিক্ষক নিয়োগ কেলেঙ্কারিতে শুক্রবার, ইডি তৃণমূলের যুব নেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করেছে। টিএমসি নেতা কুন্তল ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা শান্তনুকে। ২০০৫ সালে, হুগলি জেলার বলাগড়ের যুবক শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় মোবাইল সিম এবং বিভিন্ন ধরণের প্রসাধনী বিক্রি করতেন, কিন্তু শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ার পরে, তার সম্পদ দিন দিন দ্বিগুণ হতে শুরু করে।
শান্তনুর বিলাসবহুল বাড়ি থেকে শুরু করে গঙ্গার ধারে মনোরম বাগান পর্যন্ত অনেক আকর্ষণীয় সম্পত্তি খুঁজে পেয়েছেন ইডি আধিকারিকরা। তাঁর বলাগড়ে ফার্ম হাউসের হদিশ পাওয়া গেছে। শান্তনুর বাবা বিদ্যুৎ বিভাগে কর্মরত ছিলেন। পিতার মৃত্যুর পর তিনি সেই অফিসে চাকরি পান এবং ধীরে ধীরে শান্তনু রাজনীতিতে প্রবেশ করেন।
শান্তনু প্রথমে জিরাত কলেজে ছাত্র পরিষদের দায়িত্ব পান। এরপর ব্লকের পাশাপাশি জেলায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা হন তিনি। ছাত্রনেতা থেকে যুবনেতা হন। জেলার যুব সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব পান তিনি। সেখান থেকে শান্তনুকে রাজ্য যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি করা হয়। হুগলি জেলা ছাড়াও পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান সহ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় টিএমসি-র সুপারভাইজার হিসেবে কাজ করছিলেন তিনি। তারকেশ্বর থেকে ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরে, তিনি হুগলি জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের অফিস-আধিকারিকও হয়েছিলেন।
বলাগড়ে বারুইপাদের বাড়ির কাছে একটি ট্রেন্ডি রেস্তোরাঁ আছে, ধাবা যার নাম 'দ্য স্পুন'। ধাবা, হোম-স্টেস ছাড়াও বলাগড়ের ছদরা বটতলা এলাকায় গঙ্গার তীরে শান্তনুর একটি বড় রিসর্ট রয়েছে। রিসোর্ট ছাড়াও অনেক জমি বেনামে কিনেছেন বলেও জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দারা আরও বলেন, মাঝে মাঝে বাইরে থেকে অনেক গাড়ি এই রিসোর্টে আসত। কয়েক ঘণ্টা থেকে গাড়িগুলো আবার চলে যেত।
বলাগড় বিজেপি যুব মোর্চার আহ্বায়ক চিরঞ্জিত রায়ের অভিযোগ, নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা শান্তনুর অ্যাকাউন্টে গিয়েছে। সেই টাকা দিয়ে ধাবা, রিসোর্ট, হোটেল, হোম স্টে, অনেক ফ্ল্যাট ও প্রচুর জমি কেনা হয়েছে। শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে আগেও ব্যাঙ্ক রেকর্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনি কোথায় বিনিয়োগ করেছেন, কার সঙ্গে ব্যাঙ্ক লেনদেন করেছেন তা জানতে চায় ইডি। সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর শুক্রবার তাকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শনিবার ডাক্তারি পরীক্ষার পর আদালতে নিয়ে গেছে ইডি। আর একটু পর আদালতে পেশ করা হবে।
এই নিয়ে শান্তনুকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন ' আমি নির্দোষ, আমাকে ফাঁসানো হয়েছে, আদালতে গিয়ে সব বলবো। '
No comments:
Post a Comment