অশান্তির জেরে আত্মঘাতী স্ত্রী, ব্যাপক চাঞ্চল্য এলাকায়

পারিবারিক বিষয় নিয়ে তুমুল অশান্তি চলাকালীনই কেরোসিন তেল গায়ে ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মঘাতী হলেন স্ত্রী। আর নিজের গলায় ব্লেড চালিয়ে আত্মঘাতীর চেষ্টা স্বামীর।ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় স্ত্রীর। গুরুতর জখম অবস্থায় স্বামীকে নিয়ে আসা হয়েছে বারাসতের সরকারি হাসপাতালে। বুধবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে দত্তপুকুর থানার কদম্বগাছির ইসলামপুর এলাকায়।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। 

 পুলিশ জানিয়েছে,মৃত স্ত্রীর নাম আসুরা বিবি (৩২)। গুরুতর জখম অবস্থায় চিকিৎসাধীন আছেন স্বামী জাহাঙ্গীর আলম (৩৯)। ঘটনার পরেই অগ্নিদগ্ধ স্ত্রী আসুরা বিবির দেহ উদ্ধার করে পুলিশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।

এদিকে এদিন বিকেলেই মৃত আসুরা বিবির বাপের বাড়ির লোকজন এসে জাহাঙ্গীরের বাড়িঘর ভাঙচুর করে। কদম্বগাছি ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে অবশ্য পরিস্থিতি সামাল দেয়। মৃতার বাপের বাড়ির পক্ষ থেকে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে দত্তপুকুর থানার পুলিশ।

পুলিশ এবং স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,কদম্বগাছির ইসলামপুর এলাকাতেই বাড়ি জাহাঙ্গীর আলমের।তিনি সেলাইয়ের কাজ করেন।১৬ বছর আগে দেগঙ্গার খেজুরডাঙ্গার আসুরার সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল জাহাঙ্গীরের সাথে। তাদের দুটি সন্তানও আছে।

বেশ কিছুদিন ধরেই পারিবারিক বিষয় নিয়ে ওই দম্পতির মধ্যে অশান্তি লেগেই ছিল। এদিন দুপুরে ফের অশান্তি শুরু হয় স্বামী- স্ত্রীর মধ্যে।একসময় অশান্তি তুমুল আকার নেয়। অশান্তি চলাকালীন জাহাঙ্গীরের মা দুই নাতিকে নিয়ে বাড়ির ছাদে চলে যান। পরে ছাদে যান জাহাঙ্গীরও। ওই সময় আসুরা বিবি ঘরেই ছিলেন।

এদিন দুপুর দেড়টা নাগাদ আচমকাই প্রতিবেশীরা জাহাঙ্গীরের ঘর থেকে আগুন দেখতে পান।ঘরে আগুন লেগেছে ভেবেই প্রতিবেশীরা চিৎকার শুরু করেন। প্রতিবেশীরাই আগুন নেভানোর জন্য জাহাঙ্গীরের বাড়িতে আসেন।কিন্তু ঘরের ভিতর থেকে বন্ধ করা ছিল।প্রতিবেশীরাই ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন।কিন্তু ততক্ষনে অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘরের ভিতরেই মৃত্যু হয়েছে আসুরা বিবির।

এদিকে ছাদ থেকে নেমে এসে স্ত্রীর আত্মঘাতীর বিষয়টি জানার পরেই স্বামী জাহাঙ্গীর আলম নিজেই গলায় ব্লেড চালিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন। প্রতিবেশীরা খবর দেন কদম্বগাছি ফাঁড়ির পুলিশকে।তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌছে পুলিশ অগ্নিদগ্ধ আসুরা বিবিকে নিয়ে আসেন স্থানীয় হাসপাতালে।সেখানেই চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।গুরুতর জখম অবস্থায় জাহাঙ্গীর আলমকে প্রথমে নিয়ে আসা হয় ছোট

 জাগুলিয়া ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। পরবর্তীতে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় বারাসত হাসপাতালে। 

এদিকে ঘটনার খবর পেয়েই এদিন দেগঙ্গার খেজুরডাঙ্গা থেকে কদম্বগাছির ইসলামপুরের জাহাঙ্গীরের বাড়িতে চলে আসেন মৃতার বাপের বাড়ির লোকজন। তারা মেয়ের মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ হয়ে জাহাঙ্গীরের বাড়ির দরজা,জানালা ভাঙচুর করে।এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তৈরি হয়।কদম্বগাছি ফাঁড়ির পুলিশ অবশ্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে।পরে মৃতার পরিবারের লোকজন দত্তপুকুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করের।

দত্তপুকুর থানার পুলিশ জানিয়েছে,পারিবারিক অশান্তির জেরেই স্ত্রী আসুরা বিবি গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মঘাতী হন।পরে স্বামী জাহাঙ্গীর আলমও গলায় ব্লেড চালিয়ে আত্মঘাতীর চেষ্টা করেন।মৃতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।