প্রাচীনকাল থেকেই ঋষি মুনি যোগী ও সন্ন্যাসীর নানা ইতিহাস আমরা শুনে এসেছি। তাদের মধ্যে একজন হলেন উত্তর প্রদেশের দেওরিয়ার সিদ্ধ মহাযোগী বাবা বা দেবরাহ বাবা।
বাবার অলৌকিক ঘটনা নিয়ে অনেক গল্প আছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক বাবার অলৌকিক ঘটনা এবং গল্প সম্পর্কে -
সাধারণত একজন ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় ৭০-১০০ বছর বেঁচে থাকে। এর বেশী হলে তা রেকর্ড হিসেবে বিবেচিত হয়। কিন্তু বাবা দেবরাহ ৯০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বেঁচে থাকার রেকর্ড করেছিলেন।
যদিও বাবার জীবনকাল নিয়ে অনেক মত আছে। কেউ কেউ বলেন বাবা ২৫০ বছর বেঁচে ছিলেন, আবার কেউ বলেন তিনি বেঁচে ছিলেন ৫০০ বছর। সেই সঙ্গে বাবার জন্ম নিয়েও রয়েছে বিভ্রান্তি। বাবা কখন, কোথায়, কীভাবে জন্মগ্রহণ করেন তা আজ পর্যন্ত জানা যায়নি।
বাবা দেবরাহ ভগবান শ্রী রামের ভক্ত ছিলেন এবং শ্রীকৃষ্ণকে বাবা শ্রীরামের সমতুল্য মনে করতেন এবং ভক্তদের তাদের কষ্ট থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মন্ত্র দিতেন। কিন্তু এর বাইরেও বাবা গোসেবা ও জনসেবাকে সর্বাগ্রে মনে করতেন। বাবা তাঁর ভক্তদের অনুপ্রাণিত করতেন গরীব, অসহায় ও অভাবীদের সেবা করতে, মা গরুকে রক্ষা করতে এবং ভগবানের ভক্তিতে মগ্ন থাকতে বলতেন।
দেবরাহা বাবাকে দেখতে দেশ-বিদেশের অনেক লোক আসতেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন জওহরলাল নেহেরু, লাল বাহাদুর শাস্ত্রী, ইন্দিরা গান্ধী, রাজেন্দ্র প্রসাদ, মহামনা মদন মোহন মালব্য, পুরুষোত্তমদাস টন্ডনের মতো বিখ্যাত ব্যক্তি।
বাবা সরয়ু নদীর তীরে নির্মিত আশ্রমের কাঠের আসনে বসে ভক্তদের দর্শন দিতেন। কথিত আছে, দিয়ারা এলাকায় সরযূ থাকার কারণে বাবার নাম 'দেবরাহ বাবা' হয়। বাবার শারীরিক এবং পোশাকের নকশাও ছিল আশ্চর্যজনক। সরু শরীর, লম্বা চুল, কাঁধে যজ্ঞোপবিত এবং কোমরে হরিনের চামড়া। কথিত আছে যে বাবাও পশুদের ভাষা বুঝতেন এবং এই অলৌকিকতার সাহায্যে তিনি নিমিষেই বিপজ্জনক বন্য প্রাণীদের নিয়ন্ত্রণ করতেন। কথিত আছে যে বাবা দেবরাহা ৩০ মিনিট পর্যন্ত শ্বাস ছাড়াই জলের নিচে থাকতে পারেন।
দেবরাহ বাবার মন্ত্র:
ওম কৃষ্ণ বাসুদেবয় হারায়ে পরমাত্মনে
প্রণতঃ ক্লেশ নাশয়, গোবিন্দয়ে নমো নমঃ'
কথিত আছে, বাবা জীবনে কখনো খাবার খাননি। তিনি শুধু দুধ, মধু ও ফলমূল গ্রহণ করতেন। বাবা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ১৯৯০ সালের ১৯ শে জুন। সেদিন ছিল যোগিনী একাদশী। যোগিনী একাদশীকে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়, এতে মোক্ষ প্রাপ্তি হয়।
No comments:
Post a Comment