মধ্যপ্রদেশের উজ্জ্বয়িনী শহরে শিপ্রা নদীর তীরে রয়েছে ক্ষুধার্ত মায়ের বিখ্যাত এক মন্দির। আসলে এই মন্দিরে দুই দেবী উপবিষ্ট। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুসারে, ধারণা করা হয় যে এই দুই বোন। তাদের একজন ক্ষুধার্ত মা এবং অন্যজন ধূমাবতী নামে পরিচিত। এই মন্দিরটিকে ভুবনেশ্বরী ভুখী মাতা বা ক্ষুধার্ত মার মন্দিরও বলা হয়। কথিত আছে যে আজও সেই মন্দিরে পশু বলির প্রথা বহু শতাব্দী ধরে চলে আসছে।
আসলে এই মন্দিরে কেউ নিজের হাতে নিরামিষ খাবার তৈরি করে মাকে নিবেদন করলে মা খুব খুশি হন। এই মন্দিরে দুটি প্রদীপ স্তম্ভও রয়েছে, যার উপর প্রতি বছর নবরাত্রের সময় প্রদীপ জ্বালানো হয়। দূর্গা পূজোর অষ্টমীতে পূজোর পরে, মাকে মদ নিবেদন করা হয়।
উজ্জয়িনীতে এই মার সাথে সম্রাট বিক্রমাদিত্যের রাজা হওয়ার ঘটনা জড়িয়ে রয়েছে। । বলা হত যে এখানে আগে প্রতিদিন একজন করে যুবকের বলি দেওয়া হত।
একবার এক দুঃখী মা রাজা বিক্রমাদিত্যের কাছে গিয়ে প্রার্থনা করে, বলি যাতে না দেওয়া হয় তার জন্য অনুরোধ করেন, নইলে তিনি প্রাণ দিয়ে দেবেন বলে জানান রাজাকে। তখন বিক্রমাদিত্য তার কথা শোনেন এবং বিক্রমাদিত্য আদেশ দেন যে অনেক ধরণের খাবার তৈরি করতে এবং পুরো শহরকে এই খাবারগুলি দিয়ে সাজাতে হবে।
এই আদেশের পর বিভিন্ন স্থানে ছাপ্পান্নটি ভোগ সজ্জিত করা হয়। এ ছাড়া মিষ্টির তৈরি একটি মানব মূর্তি স্থাপন করা হয় এবং বিক্রমাদিত্য নিজেই সিংহাসনের নীচে লুকিয়ে পরেন, যাতে কেউ তাকে দেখতে না পারে।
রাত্রিবেলা যখন এই খাবার খেয়ে সমস্ত দেবীরা খুশি হয়ে চলে যান, তখন দেবী মা জানতে চাইলেন তক্তায় কী রাখা আছে। তক্তার সেই মানব প্রতিমূর্তি ভেঙ্গে খেয়ে ফেলেন দেবী মা ।
দেবী তা খেয়ে খুশি হলে, তিনি জানতে চাইলেন কে এই মূর্তিটি এখানে রেখেছে? সে সময় বিক্রমাদিত্য বেরিয়ে এসে হাত জোড় করে বেরিয়ে এসে মার কাছে বলেন যে তিনি এটি বানিয়েছেন।
এরপর দেবীমাকে বিক্রমাদিত্য বলেন, নদীর ওপারেই যেন মা থাকেন। মাও রাজী হয়ে যান। পড়ে রাজা নদীর ওপারে মার মন্দির বানিয়ে দেন। সেই থেকে মাকে ভুখী মাতা বলা হয়।এরপর দেবীমা আর কখনো মানব বলি গ্রহণ করেননি।
তবে এখানে যজ্ঞের ব্যবস্থা করা হয়। আবার আখও বলি দেওয়া হয়।
No comments:
Post a Comment