দেখতে অপূর্ব সুন্দর হলেও এই হীরাকে বলা হয় অভিশপ্ত। গোলকুণ্ডার একটি খনি থেকে তোলা এই কোহিনূর হীরা। কোহিনূরের সাথে জড়িয়ে রয়েছে অনেক বিষয়। বলা হয় এই হীরা যার কাছে গেছে সে চিরতরে ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে কোহিনূর হীরার উৎপত্তির ইতিহাস মোটেও পরিষ্কার নয়। এর সত্যতা কতটুকু, বলা যাবে না।
কোহিনূর হীরাকে মহারাজা রঞ্জিত সিং ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে উপহার দিয়েছিলেন, এখন প্রশ্ন হলো, ভারত থেকে কোহিনূর কীভাবে ব্রিটেনে গেল, কীভাবেই বা দেশে এসেছিল এই হিরা? আসুন আজ জেনে নিই কোহিনূরের গল্প।
ফার্সিতে 'কুহ-ই-নূর' এর মানে হল আলোর পাহাড়। আলোর পাহাড় হলেও অনেক রাজার সাম্রাজ্য নষ্ট হয়ে গেছে এর কারণে। তাই কোহিনূরকে অভিশপ্তও বলা হয়।
কোহিনূরের যাত্রা শুরু হয়েছিল কাকাতিয়া রাজবংশের সাথে, সেখান থেকে কোহিনূর আসে তুঘলক রাজবংশে। এরপর এই হীরাটি মুঘলদের হাতে পড়ে। ইতিহাস সাক্ষী মুঘল প্রথম দিকে তাদের আধিপত্য বিস্তার লাভ করলেও পরবর্তীতে তাদের পরিণতি খারাপ হয়। শাহজাহান তার ময়ূর সিংহাসনে কোহিনূর হীরা লাগিয়েছিলেন। কিন্তু এরপর তাঁর স্ত্রী মারা যান, তারপর ছেলে তাকে গৃহবন্দী করে রাখে।
এর পর নাদির শাহ ভারত আক্রমণ করে, ১৭৩৯ সালে মুঘলদের পরাজিত করে হীরাটি নিজের দখলে নিয়ে পারস্যে নিয়ে যান। নাদির শাহের আগে এই হীরাটির নাম অন্য কিছু ছিল, কিন্তু এর জাঁকজমক ও সৌন্দর্য দেখে নাদির শাহ এর নাম দেন কোহিনূর। কোহিনূরে নিয়ে যাওয়ার কয়েক বছর পর নাদির শাহকে হত্যা করা হয়।
নাদির শাহের পর আফগানিস্তানের সুলতান আহমেদ শাহ দুররানির বংশধর শাহ সুজা দুররানির কাছে কোহিনূর হীরা আসে, এরপর সুজা দুররানি হীরা নিয়ে আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে পাঞ্জাবে যান। এখানে তিনি রাজা রঞ্জিত সিংয়ের কাছে কোহিনূর হস্তান্তর করেন। কিছুদিন পর রাজা রঞ্জিত সিংও মারা যান। এর পরে এই হীরাটি উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছিলেন রণজিৎ সিংয়ের ছেলে দিলীপ সিং।
ব্রিটিশরা রণজিৎ সিং এর সাম্রাজ্য আক্রমণ করে এবং শিখদের উপর আক্রমণ করে। আক্রমণে শিখদের পরাজিত করার পর ব্রিটিশরা কোহিনূর তাদের দখলে নেয়। আজ এই হীরাটি ইংল্যান্ডে রয়েছে। তারপর সারা বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা ব্রিটিশ শাসনের অবসান হয়।
No comments:
Post a Comment