পাঞ্জাবের বিখ্যাত গায়ক সিধু মুসেওয়ালার খুনের রহস্য এখনও মেলেনি। মুসেওয়ালের খুনের পিছনে পাঞ্জাবে অনেক গ্যাংয়ের নাম বেরিয়ে আসছে। এই গ্যাংগুলির মধ্যে সবচেয়ে বড় নাম বিষ্ণোই গ্যাংয়ের। বিষ্ণোই গ্যাং নেতা লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ঘনিষ্ঠ সহযোগী গোল্ডি বড়ার মুসেওয়ালের হত্যার দায় স্বীকার করেছেন।
গোল্ডি বর্তমানে কানাডায় রয়েছেন। এই ঘটনার পর ফের গ্যাং ওয়ার নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে পাঞ্জাবে।
পাঞ্জাবে আজ প্রায় ৬০টি গ্যাং আছে, যাতে প্রায় ৫০০জন সদস্য রয়েছে, যাদের মধ্যে অনেকেই ধরা পড়েছে এবং জেলে আছে, কিন্তু তবুও তারা সক্রিয় রয়েছে। নব্বই দশকের মাঝামাঝি থেকে চলছে পাঞ্জাবের গাঁস্তারাবাদ। তখন ইউপিতে অনেক গ্যাং ছিল। যেগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, লুটপাট ও দখলের কাজে ব্যবহৃত হতো। পাঞ্জাবের ছেলেরা হয়তো সেগুলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে নিজেদের দল গঠন করতে শুরু করে। এরপর বেঙ্গালুরুতে ও ডাকাতির ঘটনায় পাঞ্জাবের মানুষের নামও উঠে আসে।
২০০৬ সালে, ডিম্পা নামে এক ব্যক্তির সাথে ইউপিতে একটি গ্যাংয়ের সাথে বিরোধ হয়েছিল, পরে তাকে চণ্ডীগড়ে খুন করা হয়েছিল। এরপর জাসবিন্দর রকি নামে এক ব্যক্তিকেও খুন করা হয়। গত বছর, লরেন্সএর বন্ধু ভিকি মিডুখেরাকে মোহালিতে খুন করা হয়েছিল। এর পর লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং ভিকি মিডুখেরা হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
শরণপ্রীত নামে এক ব্যক্তি, যিনি মুসেওয়ালার ম্যানেজার ছিলেন, কানাডায় গিয়েছিলেন। বিষ্ণোই গ্যাং ভেবেছিল যে ভিকির হত্যায় তাদের হাত রয়েছে এবং সে কারণেই সিন্ধু মুসেওয়ালাকে হত্যা করা হয়। এখন বামবিহা গোষ্ঠী মুসেওয়ালা হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার কথা বলছে। এমন পরিস্থিতিতে ফের গ্যাং ওয়ার শুরু হয়েছে পাঞ্জাবে।
লরেন্স বিষ্ণোই পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতি দিয়ে শুরু করেন। এর বন্ধু ভিকি মিডুখেরাও রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। এরপর থেকে হত্যাকাণ্ডে লরেন্সের নাম উঠে আসে । এসব ঘটনার সঙ্গে লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ভাইও জড়িত। এখন জেলখানা এই গুন্ডাদের জন্য নিরাপদ জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখান থেকে তারা সহজেই অপরাধ করে। এর জীবন্ত উদাহরণ মুসেওয়ালা হত্যাকাণ্ড।
বিষ্ণোই গ্যাংয়েরও আন্তর্জাতিক সংযোগ রয়েছে। কানাডার ক্রাইম রেকর্ডের দিকে তাকালে দেখা যায়, এই গ্যাংটি সেখানে বেশ সক্রিয়। অনেক আমেরিকান খুনিরাও কানাডায় আশ্রয় নিচ্ছে। কানাডিয়ান গ্যাংগুলির রাশিয়ান গ্যাং এবং আর্মেনিয়ান গ্যাংগুলির সাথেও সংযোগ রয়েছে, যারা এখানে অস্ত্র সরবরাহ করে।
No comments:
Post a Comment