মধ্যপ্রদেশের খারগোনে সহিংসতার পর আজ হল কারফিউ-এর ষষ্ঠ দিন। রাম নবমীর দিন ভয়ঙ্কর সহিংসতার কারণে খারগোন সারাদেশে আলোচিত।কিন্তু এই দাঙ্গা পর্যন্ত কখনোই খারগোন শহরের পরিচয় ছিল না।
১০ এপ্রিলের পর মধ্যপ্রদেশের খারগোন শহরের দৃশ্য ভিন্ন রূপে ধরা পড়ছে। মানুষ নিজ ঘরে বন্দী। সর্বত্র দেখা যাচ্ছে নিস্তব্ধতার ছায়ায় নিমজ্জিত।
পাঁচ দিন আগে এমপির শহর খারগোনের এই ছবি একেবারেই ছিল না। খারগোন নর্মদা নদীর তীরে অবস্থিত এবং এটিকে দেবী অহল্যার শহর বলা হয়। নর্মদা নদী খারগোন জেলা ছুঁয়ে প্রায় ৫০ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়।
খারগোন মধ্যপ্রদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে অবস্থিত। খারগোন মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল থেকে প্রায় ৩১৮ কিলোমিটার দূরে।
যেখানে এমপির ইন্দোর থেকে খারগোনের দূরত্ব ১৫০ কিলোমিটার। সেখানে তুলার ব্যাপক উৎপাদনের কারণে খারগোনকে তুলার বাটিও বলা হয়। এটি খারগোন লাল লঙ্কা উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত, কিন্তু ১০ এপ্রিলের ঘটনাটি সামাজিক ফ্যাব্রিকে তিক্ততা সৃষ্টি করেছে।
১০ এপ্রিল সেদিন ছিল রাম নবমীর দিন। সন্ধ্যা ৭টা। কেউ মন্দিরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল আবার কেউ মিছিল বের করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। কিন্তু খানগোনের তালাব চক থেকে রামনবমীর মিছিল বের হতেই শুরু হয়। প্রথমে পাথর ছোড়ার পর সহিংসতা শুরু হয়।
সবচেয়ে বেশি সহিংসতা হয়েছে খারগোনের সঞ্জয় নগরে। যেখানে দাঙ্গাবাজরা শুধু বাড়িতে ডাকাতিই করেনি, আগুনও ধরিয়ে দিয়েছিল।
খারগোনের সঞ্জয়নগরের জনপদ। প্রতি ২-৩টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং দাঙ্গা ভাঙার চিহ্ন দৃশ্যমান, অনেক বাড়িতে লুটপাট, অটো পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
কেউ কি কল্পনা করতে পারে এমন হবে।
জনগণের মধ্যে আতঙ্ক এতটাই যে তারা তাদের বাড়ি বিক্রি করে খারগোন থেকে দূরে সরে যেতে চায় এবং এখন খারগোন প্রশাসনের সামনে চ্যালেঞ্জ হল জনগণের মধ্যে আস্থা জাগিয়ে তোলা।
কিন্তু প্রশাসনের কথায় আস্থা রাখা এত সহজ নয়। ঘরের ভিতর কিছু অবশিষ্ট থাকলে শুধু পোড়া জিনিসপত্র। বাড়িঘরে বসবাসকারী মানুষরা বুঝতে পারছেন না কোথা থেকে নতুন করে সব শুরু করবে ।
ঘটনার পর প্রতি রাতে এমনভাবে টহল দেওয়া হচ্ছে যাতে মানুষ খারগোনে নিরাপদ বোধ করতে পারে। শহরে শান্তি বজায় রাখতে সব ধরনের সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে।
No comments:
Post a Comment