নিজস্ব প্রতিনিধি, উত্তর ২৪ পরগনা: সরকারি নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে স্কুল শিক্ষকের বাড়িতে চলছে প্রাইভেট টিউশন। আর সেই টিউশন চলাকালীন আপত্তি জানিয়ে ওই শিক্ষকের বাড়ি হাজির গৃহশিক্ষক সংগঠনের বেশ কয়েকজন শিক্ষক।এমনকি দেওয়া হয়েছে লজ্জা সংবর্ধনাও। যদিও তিনি টিউশন পড়াচ্ছেন না বলে অভিযোগ অস্বীকার ওই স্কুল শিক্ষকের।
ঘটনাটি উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগর পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৮ নম্বর এলাকার। দীর্ঘ অতিমারি পরিস্থিতিতে সরকার যেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের সুরক্ষার কথা ভেবে প্রায় বছর দেড়েক ধরে বন্ধ রেখেছেন সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর সেখানে সরকারি নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে নিজের বাড়িতেই প্রাইভেট টিউশন পড়ানোর অভিযোগ উঠল এক সরকারি স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ অশোকনগরের বাসিন্দা বিড়া বল্লভপাড়া হাইস্কুলের বায়োলজি (জীববিদ্যা) বিভাগের শিক্ষক রাহুল ব্যানার্জি এই অতিমারি পরিস্থিতির মধ্যেও বেশ কিছুদিন ধরে নিজের বাড়িতে প্রাইভেট টিউশন পড়াচ্ছিলেন। সেই খবর পেয়ে রবিবার সন্ধ্যায় প্রাইভেট টিউটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (PTWA) অশোকনগর শাখার বেশ কয়েকজন গৃহশিক্ষক স্কুল শিক্ষক রাহুল ব্যানার্জীর বাড়ি এসে দেখতে পান প্রায় ২০ জন ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে টিউশন পড়াচ্ছেন তিনি। এরপরে ওই শিক্ষককে ডেকে ফুলের তোড়া দিয়ে লজ্জা সংবর্ধনা দেওয়া হয় গৃহ শিক্ষকদের পক্ষ থেকে এবং অনুরোধ করে বলাও হয় আর যেন তিনি টিউশন না পড়ান।
যদিও এই গোটা ঘটনাটি অস্বীকার করে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, আমার স্ত্রী টিউশন পড়ায় আমিও বায়োলজি বিভাগের শিক্ষক তাই মাঝে মাঝে স্ত্রীকে সহযোগিতা করি। তবে স্কুল শিক্ষক স্ত্রীর দোহাই দিলেও এই ঘটনার সময় তাঁর স্ত্রী বাড়িতে উপস্থিত ছিলেন না,এটা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন উপস্থিত গৃহশিক্ষকরা । তাঁরা বলেন, যদি তার স্ত্রী টিউশন পড়াতেন তাহলে তিনি উপস্থিত নেই কেন? কেনইবা ওই স্কুল শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে টেবিলের উপরে বই এবং প্রজেক্টর রেখে শিক্ষাদানের চেয়ারে বসে আছেন?
প্রসঙ্গত এই ঘটনার কিছু সময় পরে শিক্ষকের স্ত্রী সঞ্চিতা ব্যানার্জি বাড়ি ফেরেন। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল আপনিই কি টিউশন পড়াচ্ছেন? কিন্তু কোনও উত্তর মেলেনি! তবে এই নিয়ে প্রাইভেট টিউটর ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য কমিটির সদস্য সুজয় দত্ত বলেন, সারা রাজ্য জুড়ে এমন ঘটনা ঘটেই চলেছে। তবে আজকে আমরা জানিয়ে গেলাম সেরকম হলে আগামী দিনে এই শিক্ষকের বাড়ির সামনে আমরা অনশনে বসব এবং দরকার হলে আইনের পথে হাঁটবো।
তবে প্রশ্ন থেকেই যায় যেখানে সরকারি "গেজেট নোটিফিকেশনে" স্পষ্ট করে উল্লেখ রয়েছে যে, সরকারি স্কুল শিক্ষক - শিক্ষিকারা প্রাইভেট টিউশন পড়াতে পারবেন না । তার পরেও এই অতিমারি পরিস্থিতির মধ্যেও কোভিড প্রটোকল না মেনে কি করে স্কুলের শিক্ষকরা টিউশন পড়াচ্ছেন?
No comments:
Post a Comment