মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশের খুলনা পিটিআই কোয়ারেন্টিন সেন্টারে ধর্ষণের শিকার হওয়া এক নারী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তবে ওই সময় অন্যান্য নারী ও নারী পুলিশ সদস্যরা তাকে রক্ষা করেন। খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন জানান, ডাক্তারি পরীক্ষার পর মঙ্গলবার বিকেলে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসি থেকে ওই তরুণীকে খুলনা পিটিআই কোয়ারেন্টিন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন ওই তরুণী থেকে তাকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানালে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ না হওয়ায় কেউ তাতে রাজি হননি।
এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে তিনি ঘরের দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এ ঘটনা টের পেয়ে ওই সেন্টারে থাকা অন্যান্য নারী ও নারী পুলিশ সদস্যরা তাকে রক্ষা করেন। ঘটনার পর জেলা প্রশাসন, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর এবং পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেন্টারটি পরিদর্শনে যান। এছাড়া ওই নারীকে তদারকির জন্য নারী পুলিশ নিযুক্ত করা হয়েছে। বুধবার ওই তরুণীর ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন শেষ হচ্ছে। তার করোনা টেস্ট করে ফলাফল নেগেটিভ হলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
উল্লেখ্য, গত ১ মে থেকে এএসআই মোকলেছুর রহমান খুলনা পিটিআই কোয়ারেন্টিন সেন্টারের দায়িত্বে ছিলেন। ৪ মে ভারত থেকে ফিরে ওই তরুণী সেখানে কোয়ারেন্টিনে থাকেন। গত ১৩ মে দিবাগত রাতে ডিউটিতে থাকাকালীন এএসআই মোকলেছুর রহমান নিচতলা হতে দ্বিতীয় তলায় কোয়ারেন্টিনে অবস্থানরত ওই তরুণীর (২২) কক্ষে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে তার মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এরপর ১৫ মে রাতে সে ফের গেলে তরুণী চিৎকার করে।
এরপর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ফলে কেএমপি’র প্রসিকিউশন আদেশ (নম্বর-১৭৬) বলে রোববার (১৬ মে) এএসআই মোকলেছুর রহমানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ১৭ মে মামলা দায়ের হওয়ার পর ওইদিনই পুলিশ মোকলেছুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায়।
মোকলেছুর খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত। তার বাড়ি যশোর সদরের দৌলদিহি এলাকায়। খুলনা মেডিকেলে থাকার সময় ওই তরুণী ফোনে বলেন, আমার দুটি সন্তান রয়েছে। এ ঘটনায় আমি সামাজিকভাবে হেয় হয়েছি। আমার সঙ্গে যা হয়েছে তা যেন অন্য কোনো নারীর সঙ্গে না হয়। আমি আসামির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
No comments:
Post a Comment