উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সন্দেহে সংক্রমিতের চিকিৎসায় মেডিকেল টিম। রবিবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের জরুরী বৈঠকের পর সোমবার রুগীর অস্ত্রপাচারের পরিকল্পনা চলছে মেডিকেল কর্তৃপক্ষের তরফে বলে জানাচ্ছেন ইএনটি বিভাগীয় চিকিৎসকেরা। দু একদিন সময় লাগলেও জরুরী ভিত্তিতে রুগীর শারীরিক স্থিতিকে গুরুত্ব দিয়ে ২৪ ঘন্টার মধ্যে রিপোর্ট পেশ করলো মেডিকেল, ইএনটি বিভাগীয় চিকিৎসক ও মাইক্রো বায়োলজি বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে রবিবার রাতে তার নমুনার রিপোর্টে হাতে এসেছে। রুগীর দেহে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস তথা চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিভাষায় মিউকর মাইক্রোসিসের সন্ধান মিলেছে।
উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে শুক্রবার রাতে প্রধাননগরের বাসিন্দা এক মধ্য বয়স্কা মহিলা (৫০) মিউকর মাইক্রোসিসের উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হন। মেডিকেলের ইএনটি বিভাগে ভর্তি রয়েছেন তিনি। ইএনটি বিভাগের চিকিৎসক জানান তার মুখ ও চোখে মিউকর মাইক্রোসিসের সংক্রমন ছড়িয়ে পড়েছে। মুখ ও চোখ ফুলে গিয়ে অসহ্য যন্ত্রনা রয়েছে। বেশকিছুদিন আগে তিনি কোভিড আক্রান্ত হয়ে সুস্থ্য হন। এরপরই পোস্ট কোভিড পর্যায়ে বেশ কয়েকদিন যাবৎ তার এই ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়।
উচ্চ ডায়াবেটিস রয়েছে রুগীর। বিভাগীয় চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন ভর্তির পর ডায়াবেটিস অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ইএনটি, মেডিসিন, মাইক্রো বায়োলজি,নিউরোসার্জেন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের যৌথ একটি টিম গঠন করে মেডিকেলে চিকিৎসা চলছে ওই মহিলার।শনিবার তার নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে মাইক্রো বায়োলজি বিভাগে। সেখানে ফাঙ্গাস অটো মেশিন কিটে ছত্রাক নির্নয় করা হয়।
সেই রিপোর্ট মেলার রবিবার সন্ধ্যায় নিযুক্ত বিভাগীয় চিকিৎসকদের জরুরী বৈঠক হয়। সেখানে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তাদের অনুমতি থাকলে সোমবার উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে রুগীর অস্ত্রোপচার হবে। তবে বেশ কিছুদিন হয়ে যাওয়ায় ছত্রাক সংক্রমন মুখ ও চোখের অংশ পেড়িয়ে মস্তিষ্কের কাছাকাছি অংশে বিস্তার করছে। ছত্রাকের প্রভাবে চোখের যন্ত্রণায় রুগী চোখ বন্ধ রয়েছে। দৃষ্টিশক্তিতে অক্ষম হয়ে পড়েছেন। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন এই পরিস্থিতিতে শরীরের যে সমস্ত অংশ ছত্রাক সংক্রমণের কবলে আসে তা অস্ত্রপাচার করে কেটে বাদ দিতে হবে।
তবে সংক্রমন মস্তিকে ছড়িয়ে গেলে তা জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে তা দেখা হবে সোমবার। চক্ষু, ইএনটি, মাইক্রোবায়োলজি ও নিউরোসার্জারির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি টিম অস্ত্র পাচার করবে। পাবলিক হেলথ ওএসডি ডাঃসুশান্ত রায় জানান উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে একজন সন্দেহজনক মিউকর মাইক্রোসিস রুগী ভর্তি হয়েছে। সর্বতোভাবে তার চিকিৎসা চলছে।
রুগীর দায়িত্বে থাকা ইএনটির বিভাগের চিকিৎসক জানান ওই রুগীকে কোভিড চিকিৎসার সময় কি পরিমান স্টেরয়েড প্রয়োগ করা হয়েছিল সে সমস্ত বিষয়গুলি দেখা হচ্ছে । বর্তমানে রুগীকে জরুরী যাবতীয় ওষুধপত্র দেওয়া হচ্ছে। অস্ত্রপাচার সহ চিকিৎসার ক্ষেত্রে পরবর্তী অন্যান্য পদ্ধতি নেওয়া হবে। তবে ছত্রাক সংক্রমন নতুন কোনো রোগ নয়। রুগীর শরীর থেকে অন্য ব্যক্তির শরীরে সংক্রমন ছড়ায় না।
No comments:
Post a Comment