রাজনীতিতে নক্ষত্র পতন! প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য
কলকাতা: রাজ্য রাজনীতিতে নক্ষত্র পতন, প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার সকাল ৮.২০ নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। পাম অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতেই প্রয়াত হন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। কয়েকদিন ধরেই শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন।
শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি ঘরের বাইরেও যেতেন না। এর আগেও বেশ কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, প্রতিবারই সংগ্রাম করে বাড়ি ফিরেছেন। গত বছর তাঁকে শেষবার আলিপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। চিকিৎসা শেষে তাঁকে বাড়িতে পাঠানো হয়। বাড়িতেই চিকিৎসাধীন ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। ২০২১ সালে বুদ্ধদেব করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন। এ সময় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ভালো হয়ে যান। কিন্তু এবারে আর শেষ রক্ষা হল না। না ফেরার দেশে চলে গেলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী।
১৯৪৪ সালের ১ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। পাঁচ দশকের বর্ণিল রাজনীতিতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য উজ্জ্বল নাম। তিনি দীর্ঘদিন পলিটব্যুরোর সদস্য ছিলেন। রাজ্যে ২০১১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বামেরা তাদের দুর্গ হারায়। ৩৪ বছর বয়সী বাম দলের শেষ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন তিনি।
১৯৯৯ সালে উপমুখ্যমন্ত্রী হন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ এবং ২০০৬ থেকে ২০১১ পরপর দুবার মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। ২০১১ তে তৃণমূল ঝড়ে নিজের দীর্ঘদিনের গড় যাদবপুরেই পরাজিত হন।
তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে অনেক চড়াই-উৎরাই আসে। ১৯৭৭ সালে কাশীপুর বিধানসভা থেকে নির্বাচন জিতে বিধায়ক হন তিনি। ১৯৮৭ সালে যাদবপুর বিধানসভার প্রার্থী হন এবং টানা সেই কেন্দ্রেরই বিধায়ক ছিলেন তিনি। এরপর ২০১২ থেকেই রাজনীতির সঙ্গে দূরত্ব বাড়াতে থাকেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর শারীরিক অসুস্থতায় কাবু হয়ে একে একে পলিটব্যুরো, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য কমিটির সদস্য পদ ছেড়ে দেন। কার্যত ঘরবন্দী করে ফেলেন নিজেকে। তবে, ২০১৬ সালে তাঁকে দেখা গিয়েছিল সক্রিয় রাজনীতিতে; বাম-কংগ্ৰেস জোট তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যর। তাঁর প্রয়াণে বাংলার রাজনীতির এক যুগের অবসান হল। তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ রাজনৈতিক মহল।
No comments:
Post a Comment