ধর্ষণ ও হত্যার শিকার ওই মহিলা ডাক্তারের বাবা জানালেন প্রতিক্রিয়া
নিজস্ব প্রতিবেদন, কলকাতা : কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে এক মহিলা ডাক্তারকে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় মানুষ ক্ষুব্ধ এবং সারা দেশের শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা তাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। এদিকে দুর্ঘটনার শিকার মেয়েটির বাবা তার বেদনা প্রকাশ করে বলেছেন, তিনি তার এক মেয়েকে হারিয়েছেন, কিন্তু লাখ লাখ ছেলে-মেয়ে পেয়েছেন। বিশ্বজুড়ে চলছে 'রাত্রি পুনরুদ্ধার' প্রতিবাদের জন্য তিনি গভীরভাবে দুঃখিত। তার নাম না নেওয়ার জন্য সবাইকে অনুরোধও করেন তিনি। মরদেহের ছবি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার মেয়ের ছবি শেয়ার করবেন না এবং ভুল তথ্য ছড়াবেন না।
নিহত মহিলা চিকিৎসকের বাবা বলেন, 'সেদিন সকাল ১০টা ৫৩ মিনিটে হাসপাতালের সহকারী সুপারের কাছ থেকে ফোন আসে, এটা আত্মহত্যা। হাসপাতালে পৌঁছানোর পর আমরা তাৎক্ষণিকভাবে তার মরদেহ দেখতে পাইনি। আমরা তাকে দেখেছি বিকেল ৩টায়। আমরা অনেক চাপের মধ্যে ছিলাম। কয়েকজন তার গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টাও করে। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের বাড়িতে এলে আমরা তাকে বলেছিলাম যে সঞ্জয় রায় (গ্রেপ্তারকৃত আসামি) এতে জড়িত নাও থাকতে পারে বলে আমরা সন্দেহ করছি। বাবা বলেন, 'মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই বলেছিলেন যে তিনি সিবিআই তদন্ত চান। আমরা তা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।
চলমান আন্দোলন ও প্রতিবাদ সমাবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে নির্যাতিতার মা বলেন, 'দেশ-বিদেশে যে আন্দোলন ও বিক্ষোভ হচ্ছে আমরা তাদের শতভাগ সমর্থন করি। আমরা সমস্ত প্রতিবাদীকে আমাদের ভালবাসা পাঠাই। আমরা সবাইকে আমাদের ছেলে মেয়ে মনে করি। একদিন আগে, যুগ্ম পরিচালক ভি চন্দ্রশেখরের নেতৃত্বে সিবিআইয়ের একটি দল সোদেপুরে নির্যাতিতার বাড়িতে গিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সিবিআইয়ের চার সদস্যের একটি দল বাড়িতে পৌঁছে এক ঘণ্টারও বেশি সময় পরিবারের সঙ্গে কথা বলে। তাঁর সঙ্গে দেখা করার পর ভি চন্দ্রশেখর বলেন, 'তদন্ত চলছে। আমরা অভিভাবকদের বক্তব্য নিয়েছি।
৮-৯ আগস্ট রাতে কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের পিজি ছাত্রী ও শিক্ষানবিশ চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুন করা হয়। ঘটনার পর গত ৯ আগস্ট সকালে হাসপাতালের সেমিনার হলে ওই নারী চিকিৎসকের লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনার পর দেশের মানুষের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এরপর সারাদেশে চিকিৎসকদের ধর্মঘট ও বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। আজ সারাদেশে শিক্ষানবিশ চিকিৎসকরা ধর্মঘটে রয়েছেন এবং কলকাতায় এক মহিলা চিকিৎসককে হত্যার প্রতিবাদে তাদের প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। আগামীকাল রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত শিক্ষানবিশ চিকিৎসকদের ধর্মঘট চলবে। বেসরকারি ও সরকারি হাসপাতালে জরুরি সেবা চালু থাকবে, তবে অন্য কোনো অস্ত্রোপচার করা হবে না।
No comments:
Post a Comment