হিমবাহ দেখতে বেশ সুন্দর। একে বরফের নদী এবং বরফের চলমান স্তরকে হিমবাহ বলা হয়। হিমবাহের সম্পর্কে কিছুটা জেনে নেওয়া যাক-
পৃথিবীতে দু ধরনের হিমবাহ দেখতে পাওয়া যায়। প্রথম আলপাইন বা উপত্যকায় পাওয়া হিমবাহ এবং দ্বিতীয় পর্বত হিমবাহ, যা পাহাড়ের চুড়োয় রয়েছে। পার্বত্য অঞ্চলে, উচ্চতা বাড়ার সাথে সাথে তাপমাত্রা কমে, যার কারণে বাতাসে আর্দ্রতা আসে। এই বাতাস পাহাড়ে পড়লে তা তুষারে রূপ নেয়। একেই হিমবাহ বলে। শ্রীনগর, লাদাখ এবং হিমাচলে বড় আকারের হিমবাহ পাওয়া যায়।
হিমবাহের গঠন:
প্রতি বছর ঠান্ডা এলাকায় তুষার জমে। যার কারণে এর ঘনত্ব আরও বেড়ে যায়। বরফের ছোট ছোট টুকরো হিমবাহে পরিণত হতে শুরু করে এবং নতুন তুষারপাতের কারণে তা চাপা পড়ে যায়। এই প্রক্রিয়াটিকে ফার্ন বলা হয়।
এই কঠিন বরফ খুব বেশি পরিমাণে জমতে শুরু করে। আর হিমবাহ গলে নদীতে জলের উৎস হয়ে ওঠে। এই হিমবাহ যখন জলের সাথে মিশে যায়, তখন তা জলের সাথে মিশে টাইট ওয়াটার গ্লেসিয়ারে পরিণত হয়। জলে ভাসমান এই বরফের টুকরোগুলো জলের প্রবাহ বাড়ায়, যাকে কেলভিন বলে।
হিমবাহের প্রভাব:
হিমবাহ অতিরিক্ত পরিমানে গলে গেলে আশপাশের এলাকায় বন্যার ঝুঁকি বেড়ে যায়, যা আমরা সকলেই জানি। প্রচুর পরিমাণে হিমবাহ গলে যাওয়ার ফলে সমগ্র বিশ্বের আবহাওয়ায় এর প্রভাব পড়ে এবং জলবায়ু চক্র বিঘ্নিত হয়। পরিবেশের উন্নতির প্রচেষ্টায়, অনেক দেশ কার্বন নির্গমনের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হিমবাহ গলে যাওয়ার কারণে অনেক নতুন মহামারীও দেখা দিতে পারে।
অ্যান্টার্কটিক হিমবাহ :
গ্লোবাল ওয়ার্মিংয়ের কারণে পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকার হিমবাহ গলছে। একে তটাইটাস হিমবাহ বলা হয়। এই হিমবাহের আয়তন ব্রিটেনের আয়তনের চেয়েও বড়। এই হিমবাহের জল সারা বছরই গলে গিয়ে সাগরে পড়ছে, যার কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠে জলের উচ্চতা দ্রুত বাড়ছে।
জাতিসংঘের জলবায়ু বিজ্ঞান প্যানেল তাদের একটি গবেষণায় বলেছে যে ২১০০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ২৬ সেন্টিমিটার থেকে ১.১ মিটারে উন্নীত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে সাগরের তীরে অবস্থিত দেশ, শহর ও গ্রাম ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
No comments:
Post a Comment