মুঘল সাম্রাজ্যের রাজকন্যা শাহজাহানের মেয়ে জাহানারা মুঘল সাম্রাজ্যের সবচেয়ে ধনী মহিলা ছিলেন। ভাই আওরঙ্গজেবের বিরোধিতা করা সত্ত্বেও এবং দারা শিকোহকে বেশি স্নেহ করা সত্ত্বেও তিনি দুজনের কাছ থেকে সমান সম্মান পেয়েছিলেন। পিতা শাহজাহানের কাছ থেকে উপহার হিসেবে অঢেল সম্পদ ও রাজ্য পেয়েছিলেন। তাসত্ত্বেও তিনি বিয়ে করেন নি। কেন? জেনে নেওয়া যাক কারণ -
ঐতিহাসিকরা বলছেন, স্ত্রীর মৃত্যুর পর শাহজাহান সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছিলেন। তার দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়েছিল। সঙ্গীত থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন। এমন সময়ে সন্তানদের মধ্যে বড় হওয়ায় শাহজাহানের দেখাশোনার দায়িত্বও জাহানারার কাঁধে পড়ে।
১৬১৪ সালের ২ এপ্রিল জন্ম নেওয়া জাহানারা মা মমতাজের মতোই ছিলেন সুন্দরী। তিনি তিনি ফারসি ভাষায় দুটি গ্রন্থ রচনা করেন। ১৬৪৮ সালে শাজাহানাবাদের দুটি ভবন তার তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয়। সম্রাট তাঁকে উপহার হিসেবে সুরাত বন্দর দিয়েছিলেন, সেখান থেকে সমস্ত আয় তাঁর ভাগে আসত। এতে তাঁর বার্ষিক আয় ছিল মাত্র ৩০ লক্ষ টাকা।
সম্রাট তাঁকে খুব ভালবাসতেন। একবার তিনি খারাপভাবে পুড়ে যান। প্রায় ৬ মাস তার চিকিৎসা চলে। সুস্থ হয়ে উঠলে সম্রাট রাজকোষের দরজা খুলে দেন। গরীবদের মাঝে আশরাফী বিতরণ করা হয়। বন্দীদের মুক্তি দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, সম্রাটের মৃত্যুর পর জাহানারা অর্ধেক সম্পত্তি পেয়েছিলেন। বাকি অর্ধেক ভাগ হয় চার ভাইয়ের মধ্যে।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে ইতিহাসবিদ নিকোলাও মানুচ্চি বলেছেন, জাহানারার প্রেমিক গোপনে তাঁকে দেখতে যেতেন। তাদের বিয়ে না হওয়ার পেছনে অনেক কারণ রয়েছে এর মধ্যে একটি হল কন্যার প্রতি সম্রাটের অপরিসীম মমতা।
ইতিহাসবিদরা বলেন, সে সময় জাহানারার ব্যক্তিত্ব এতটাই প্রভাবশালী ছিল যে, তাঁর মত কাউকে পাওয়া যায়নি বা এ জন্য বাবার ওপর তিনি কোনও চাপও দেননি তিনি। সময়ের সাথে সাথে, সুফি মতাদর্শের প্রতি তাঁর ঝোঁক বৃদ্ধি পায় এবং এই বিষয়টি থেকে মনোযোগ সরে যায়।
No comments:
Post a Comment