নিউজ ডেস্ক : কিডনিতে পাথরের সমস্যা আজকাল খুবই সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে। প্রচুর সংখ্যক মানুষ এই সমস্যায় ভুগছে।
খারাপ জীবনধারা এবং ভুল খাদ্যাভাসের কারণে তরুণরাও এই সমস্যায় ভোগছেন।
কিডনি আমাদের দেহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ এবং এটি রক্ত থেকে বিপজ্জনক এবং বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে। শরীরে জলের অভাব বা অন্যান্য কারণে কিডনিতে পাথর হতে পারে। মূত্রনালীতে শক্ত পদার্থ তৈরির কারণে যখন প্রস্রাবে ক্যালসিয়াম, অক্সালেট, সিস্টাইন এবং ইউরিক এসিডের মতো পদার্থের মাত্রা বেড়ে যায়। তখন কিডনিতে পাথর হয় বলে ধরা হয়ম
কিডনিতে পাথর হলে পিঠ বা তলপেটে অসহ্য যন্ত্রণা সৃষ্টি হয় এবং আরও অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
পাথরের লক্ষণ হওয়া বোঝার উপায় :-
১.তলপেটে তীব্র ব্যথা
২.প্রস্রাবে রক্ত
৩.ব্যথার সঙ্গে ঘন ঘন প্রস্রাব
৪.জ্বর হওয়া
৫.বমি হওয়া
৬. শরীরে জলের মাত্রা কমে গেলে
কিডনিতে পাথর হওয়ার কারণগুলি হলো :-
শরীরে জলের অভাবে, শরীরে উপস্থিত
ক্ষতিকর পদার্থ টক্সিন বের হতে পারে না, যার কারণে পাথর তৈরি হতে পারে।
উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাদ্য:-
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করলে কিডনিতে পাথরের সমস্যাও হতে পারে। মুরগি, মাছ এবং শুয়োরের মাংসে উচ্চ প্রোটিন থাকে। তাই উচ্চ প্রোটিনযুক্ত খাবার রোজ খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দেয়।চিকিৎসকদের মতে, প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তা মেটাতে ডায়েটে লেবু, সবজি, মসুর ডাল, চিনাবাদাম বা সয়াবিন খাবার অন্তর্ভুক্ত করা ভালো।
বীজ জাতীয় খাবার:-
যেসব খাবারে অক্সালেট থাকে সেই সব খাবারে কিডনিতে পাথর হতে পারে। টমেটো, পেয়ারা, বেগুন, ডালিম ইত্যাদির মতো অধিক বীজজাত দ্রব্য খেলে পাথর হতে পারে। এরসঙ্গে, পালং শাক, ওট, ময়দা ইত্যাদি অতিরিক্ত পরিমানে খেলেও কিডনিতে পাথর হতে পারে।
অতিরিক্ত ওষুধ খেলে:-
অন্ত্রের সমস্যায় ভোগা মানুষ যেমন প্রদাহজনক অন্ত্রের রোগ, ডায়রিয়া, আলসারেটিভ কোলাইটিস ইত্যাদি রোগে ওষুধ প্রচুর পরিমানে খেলে কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এ ছাড়া কিডনি রোগ, ক্যান্সার, বিপি এবং এইচআইভির মতো রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধেও পাথর হতে পারে।
স্থূলতা:-
যাদের ওজন বেশি তাদের কিডনি তে পাথর হওয়ার সম্ভাবনাও বেশি। যদি কেউ স্থূলতার শিকার হলে এবং বডি মাস ইনডেক্স ৩০ বা তার বেশি হলে,তবে কিডনিতে পাথর হতে পারে।
ঘরোয়া প্রতিকার:-
পাথরের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে, এক গ্লাস জলে ৩-৪ টি বড় এলাচ বীজ, ১ চা চামচ চিনির মিছরি এবং কয়েকটি তরমুজের বীজ ভিজিয়ে রেখে, পরের দিন সকালে সেই বীজমিশ্রিত জল পান করার সঙ্গে বীজ গুলো খেলে কিডনিতে থাকা পাথর গলে যাবে এবং কয়েক দিনের মধ্যেই বেরিয়ে আসবে।
আমলকি ও মুলো :-
প্রতিদিন আমলকি গুঁড়োর সঙ্গে মুলো খেলেও মূত্রাশয় থেকে পাথর বেরিয়ে আসবে।
পেঁপে গাছের শিকড় :-
কিডনি তে পাথর অপসারণের জন্য পেঁপের শিকড় খুবই কার্যকর বলে মনে করা হয়। ১ গ্লাস জলে ৭-৮ গ্রাম পেঁপের শিকড় রেখে সেই জল ফিল্টার করে প্রতিদিন এই জল পান করলে পাথরগুলো কিছুদিনের মধ্যে দ্রবীভূত হবে।
আপেল ও ভিনেগার :-
আপেল ও ভিনিগার পাথর অপসারণের জন্য উপকারী বলে মনে করা হয়। আপেল ও সিডার ভিনিগারে সাইট্রিক অ্যাসিড থাকে, যা কিডনির পাথরকে ছোট ছোট টুকরো করে ভেঙে দেওয়ার কাজ করে। আপেল ও সিডার ভিনিগার খেলে শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের হয়ে যায়। এর পাশাপাশি এটি পাথর গঠন রোধ করে। এর জন্য, প্রতিদিন ১ চা চামচ ভিনিগার ও আপেল ১ গ্লাস গরম জলের সঙ্গে খেলে পাথর গলে যাবে এবং কিছুদিনের মধ্যে টা বেরিয়ে আসবে।
No comments:
Post a Comment