নিজস্ব প্রতিনিধি, পশ্চিম বর্ধমান : সুদখোরদের তান্ডবের বলি এক পড়ুয়া। অপমানে আত্মঘাতী ঐ পড়ুয়া। দুর্গাপুরের এই ঘটনা ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বাড়ির বড় ছেলে রাহুল দাস কোনো কারণে হোক লক্ষাধিক টাকা ধার করেছিলেন বেশ কয়েকজনের কাছে। কিন্তু বেশ কয়েকগুণ সুদের বিনিময়ে এই টাকা নিয়েছিল রাহুল দাস। টাকা শোধ দিতে না পারায় প্রতিনিয়ত লোকজন দুর্গাপুর ইস্পাত নগরীর টেগোর এভিনিউয়ের বাড়িতে এসে হুজুতি দিত বলে অভিযোগ। এই পাওনাদের ভয়ে গত রবিবার স্ত্রীকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় রাহুল।
দুর্গাপুর থানায় এরপর মিসিং ডায়েরী করা হয় পরিবারের তরফে। কিন্তু পরিবারের লোকজন পড়ে জানতে পারেন শ্বশুর বাড়িতে রয়েছে রাহুল। পড়ে থানায় গিয়ে সেই মিসিং ডায়েরি তুলে নেয় রাহুলের পরিবার। বিপত্তি বাঁধে মঙ্গলবার বিকেলে। বাড়ির ছোটো ছেলে বছর ২২ এর রোহন দাস সেই সময় ঘরে একাই ছিল। রোহনের বাবা গৌতম দাস সেই সময় চিত্তরঞ্জনে কাজে ছিলেন। আর মা ছিলেন এক আত্মীয়ের বাড়িতে। ঠিক এই সময় বাড়ির বাইরে ফের হুজুতি শুরু করে পাওনাদাররা। রীতিমতো দাপিয়ে বেড়ায় ঐ দুষ্কৃতীরা।
শেষ পর্যন্ত রোহনকে মারধরের অভিযোগ ওঠে ঐ দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। তখন রোহন বলে টাকা তো সে নেয়নি আর এই ব্যাপারে সে কিছুই জানেনা। এরপর রোহনের বাবাকে ফোন করে ঐ দুষ্কৃতীরা জানিয়ে দেয় রোহনকে তারা তুলে নিয়ে যাচ্ছে । টাকা পেলে ছেলেকে ছাড়বে। নয়তো টাকা আদায়ের জন্য অন্য রাস্তায় হাটবে তারা।
প্রতিবেশীরা রুখে দাঁড়ানোয় তখনকার মতো পালিয়ে যায় তারা। এরপর দুর্গাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে আসে রোহন। কিন্তু সেই সময় অভিযোগ দায়ের করতে না পেরে ঘরে ফিরে আসে রোহন। মা বাবা পরিবারের এই অপমান মেনে নিতে না পেরে শেষ পর্যন্ত ঘরের ভেতরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয় সে।
এক প্রতিবেশী রোহনকে ডাকতে এসে দেখে সে ঘরের মধ্যে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। এরপর দুর্গাপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। রোহনের বাবা গৌতম দাসের দাবি, এই অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দিক পুলিশ। একই দাবি তুলেছেন পাড়া প্রতিবেশীরা।
সুদখোরদের দাপটে এক পড়ুয়ার এমন মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় এখন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে মৃতের পরিবার পরিজন ও পাড়া প্রতিবেশীরা । দুর্গাপুর থানায় এই ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বেশ কয়েকজনের নামে।সূত্রমাফিক জানা গেছে অভিযুক্তরা পলাতক।পুলিশ এই ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে।
No comments:
Post a Comment