বিশ্বভারতীর সঙ্গীত ভবনের সকল শিক্ষককে কোনরকম অনুষ্ঠান ও কোর্স করার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলো বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
এই বিজ্ঞপ্তিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে সঙ্গীত ভবনের কোন অধ্যাপক-অধ্যাপিকা বহিরাগত কোন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার কোনরকম অনুষ্ঠানে পারফর্ম বা প্রতিনিধিত্ব করার প্রস্তাব, অনুরোধ ও অ্যাসাইনমেন্ট নিতে পারবে না। সেটা অনলাইন হোক বা অফলাইন হোক না কেন। যে কোন মাধ্যমেই, যে কোন অনুষ্ঠান বা কোর্স করতে গেলে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক বলেও জানানো হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। যারা এই নিয়ম মানবেন না তাদের ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও প্রছন্ন হুমকি দেওয়া হয়েছে ওই নোটিশে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যেতে পারে সারা বিশ্বে রবীন্দ্র সংগীত ও রবীন্দ্র নৃত্যের পরম্পরাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে সংগীত ভবনের অধ্যাপক-অধ্যাপিকা ও ছাত্র-ছাত্রীরা। রবীন্দ্র পরম্পরাকে ধরে রাখা এই সঙ্গীত ভবনের ঘরানাকে তাঁরা বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেন। সারা বছরই দেশে বিদেশে নানা অনুষ্ঠানে সুনামের সঙ্গে অংশ নিতে দেখা যায় সঙ্গীত ভবনের অধ্যাপক অধ্যাপিকা এবং ছাত্র-ছাত্রীদের। শুধুমাত্র রবীন্দ্র সংগীত ও রবীন্দ্র নৃত্য নয়, শাস্ত্রীয় সংগীত ও বিভিন্ন যন্ত্র সঙ্গীতের চর্চাতেও সারা বিশ্বে নজর কেড়েছে সংগীত ভবন।
তাই সেই ভবনের শিক্ষকদের এবার অনুষ্ঠান করার ক্ষেত্রে এই বিধি নিষেধ ঘোষণা করায় আবারও বিতর্কের মধ্যে পড়লো বিশ্বভারতীর উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নেতৃত্বাধীন বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সঙ্গীত ভবনের এক গবেষক জানান, “শুধু যে অধ্যাপক ও অধ্যাপিকারা অনুষ্ঠান করেন এমন নয়। বলা ভালো, ওঁদের জন্যেই আমরা আমাদের প্রতিভা বিশ্ব মঞ্চে তুলে ধরার সুযোগ পাই। এটা আজ বলে নয়, দীর্ঘদিন ধরেই এটা চলে আসছে। এমনকি আমাদের এখন যারা অধ্যাপক ও অধ্যাপিকা, তাঁরাও একই ভাবে তাঁদের শিক্ষকদের মাধ্যমে নিজেদের মেলে ধরেছিলেন। তাই এই সিদ্ধান্ত আমাদের মতো ছাত্র ছাত্রীদের পক্ষেও অন্তরায়।”
“আমরা যারা সঙ্গীত ভবন বা কলা ভবনে পড়ি সেখানে পারফর্মটাই শেষ কথা। এই পারফরমেন্সই আগামী দিনে আমাদের ভবিষ্যৎ গড়ে দিতে সাহায্য করে। আমাদের শিক্ষক শিক্ষিকারা আমাদের হাতে ধরে যেমন সেখান, তেমনই তাঁরা আমাদের আগামিদিনের জন্যে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়ে গিয়ে প্রোমট করেন। তাঁরা অনুষ্ঠান না করতে পারলে আমরাও আগামীদিনে সমস্যায় পড়তে চলেছি,” বলেই মত প্রকাশ করলেন সঙ্গীত ভবনের রবীন্দ্র নৃত্য বিভাগের এক ছাত্রী।
প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুর এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বলেন, “এমন সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যায় না। কখনো কোন শিল্পীকে বলা যায় না যে তিনি না তাঁরা কোথায় অনুষ্ঠান করবে, কোথায় করবে না। এ ভাবে কখনো শিল্পীস্বত্বা বিকশিত হতে পারে না, ঘোর আনাচার শুরু হয়েছে ।” বিশ্বভারতীর প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন জানিয়েছেন , মূল লক্ষ থেকে বিস্বভারতীর পা হড়কে গেছে।
No comments:
Post a Comment