ভিন রাজ্যে বসে শহরের পরিচিত ব্যক্তির ফেসবুকের হুবাহু ক্লোন প্রোফাইল তৈরি করে প্রতারণার জাল বিছোচ্ছে হ্যাকারেরা। শিল্পপতি, ব্যবসায়ি, নেতা পুলিশ ঊর্ধ্বতন কর্তাদের নামের হুবাহু ক্লোন প্রোফাইল করে তাদেরই ফ্রেন্ডলিস্টে থাকা ঘনিষ্টদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা চাওয়া হচ্ছে। বিগত মে মাসেই ফেসবুক একাউন্ট ক্লোন ও হ্যাকিং সংক্রান্ত ৭৪টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে শিলিগুড়ি সাইবার সেলে।
সম্প্রতি শিলিগুড়ি শহরে একাধিক পুলিশকর্মী, আধিকারিক, ব্যবসায়ি নেতা, সাংবাদিক শহরের সু পরিচিত ব্যক্তিদের নাম ছবি দিয়ে এমনকি ফেসবুকের বন্ধুতালিকাকে অনুসরণ করে ক্লোন প্রোফাইল থেকে টাকা চাওয়ার গুচ্ছের অভিযোগ সামনে আসে। ফেসবুক প্রোফাইলকে ক্লোন করে অনুরূপ একাউন্ট তৈরি করে তা দিয়ে টাকা আদায়ের নামে প্রতারনার এই জাল থেকে বাদ পড়েনি খোদ শিলিগুড়ি সদ্য বদলি হয়ে যাওয়া পুলিশ কমিশনার ডিপি সিং।
এই দীর্ঘ তালিকায় রয়েছে শহরের উল্লেখযোগ্য পেশার সঙ্গে যুক্ত, বড় ব্যবসায়ী, নেতা অর্থাৎ সুপরিচিত একাধিক ব্যক্তিদের নাম। তবে কিভাবে তৈরি হচ্ছে এই ক্লোন প্রোফাইল? প্রোফাইল হ্যাকিঙের পরিবর্তে ক্লোন প্রোফাইলকে তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করছে ভিন রাজ্যের আন্তঃজাল অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হ্যাকারেরা। শিলিগুড়ি সাইবার ক্রাইম থানার সূত্রে জানা যাচ্ছে ভিন রাজ্য রাজস্থানের ভরতপুর ও হরিয়ানা, মিরাট ভিন্ন রাজ্যের এই সমস্ত এলাকা অপরাধের ক্রাইম বেল্ট। সম্প্রতি যে কটি অনুরূপ প্রোফাইল খুলে ম্যাসেঞ্জারে টাকা চাওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে। সে সবকটি ক্লোন প্রোফাইল তৈরি ও ব্যবহার করা হয়েছে ভিন রাজ্যের শত শত কিমি দূরে বসে।
তদন্তে এমনটাই উঠে এসেছে। তবে এই ইন্টারনেট অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা তদন্তের মোড় ঘোরাতে এ রাজ্যেরই সিম কার্ড ব্যবহার করছেন। জানা যাচ্ছে শিলিগুড়ি শহরের সুপরিচিত ব্যক্তিদের ফেসবুক প্রোফাইলের ওপর নজর রাখছে তারা। যে সমস্ত ব্যক্তিরা ফেসবুকে বেশ সক্রিয় তাদেরই ক্লোন প্রোফাইল তৈরি করছে সাইবার অপরাধীরা। ব্যক্তির ফেসবুকের বন্ধুতালিকাকে অনুসরন করে ঘনিষ্টদের কাছে টাকা চাওয়া হচ্ছে। অতি দক্ষ এই অপরাধের সঙ্গে যুক্তরা খুব বেশি সময়ের জন্য ক্লোন প্রোফাইলটি সক্রিয় রাখছেন না।
কার্যসিদ্ধি না হলেও প্রোফাইলে রিপোর্ট করার দু থেকে তিন ঘণ্টার মধ্যেই ফেসবুক থেকে একেবারে মুছে ফেলা হচ্ছে ক্লোন প্রোফাইলটি। আর এতেই তদন্তের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হচ্ছে। প্রোফাইল হ্যাকিঙের ক্ষেত্রে ওই একাউন্টের সূত্র ধরে অপরাধী অবধি পৌঁছে যায় সাইবার ক্রাইম বিভাগের তদনন্তকারীদের দল। তাই এবারে কায়দায় বদল এনে অতি দক্ষতার সাথে একাউন্ট মুছে ফেলায় ফেসবুক কর্তৃপক্ষও তদন্তে মদত দিতে পারছে না সাইবার সেলকে।
টাওয়ার লোকেশন মিললেও অপরাধীর নাগালে পৌঁছতে সময় লেগে যাচ্ছে। এ বিষয়ে শিলিগুড়ি সাইবার ক্রাইম থানার পুলিশ আধিকারিক ওসি প্রদীপ দেবনাথ জানান আমরা সাইবার সচেতনতামূলক অভিযান চালাচ্ছি। আগে কিশোর বয়েসী মেয়ে ও যুবতীদের কাছ থেকেই এই ধরনের অভিযোগ মিলতো।সেসমত ব্যবস্থা নিতে গিয়ে দেখা যেন অভিযুক্তদের পরিচিতের মধ্যেই কেউ ফেসবুকে এই ধরনের কাজ করছে।
আবার ফেসবুক গেমিংয়ের ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক সময়তে প্রোফাইল লিঙ্ক ধরে ক্লোন প্রোফাইল তৈরির কাজ করা হচ্ছে। কিন্তু এখন সুপরিচিত ব্যক্তিত্বরা সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন। ভিন রাজ্য থেকে অতি দক্ষ চক্র কাজ করছে এর পেছনে।
No comments:
Post a Comment