শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা মাঠ লাগোয়া কবিগুরু হস্তশিল্প বাজারের জমি থেকে হস্তশিল্পীদের উচ্ছেদ চেয়ে বোলপুরের নবনিযুক্ত পৌর প্রশাসক পর্ণা ঘোষ কে চিঠি লিখল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। চিঠিতে জমির দাগ নাম্বার উল্লেখ করে ওই জমি বিশ্বভারতীর দাবি করে জমি দখলে সাহায্য প্রার্থনা করেছেন বিশ্বভারতীর অ্যাক্টিং রেজিস্ট্রার অশোক মাহাতো। এ খবর ছড়িয়ে পড়তেই শান্তিনিকেতন জুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
সোমবার সাংবাদিকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পর্ণা দেবীকে দেওয়া চিঠির প্রতিলিপি পোস্ট করেন বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার। ওই চিঠিতে দাবি করা হয় কবিগুরু হস্তশিল্প বাজারের বর্তমান জমিটি বিশ্বভারতীর অধীন। কিন্তু হস্ত শিল্পীরা সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে ওই জমি কে দখল করে ব্যবসার কাজ চালাচ্ছেন। এতে বিশ্বভারতীর ভাবমূর্তি যেমন ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে অন্যদিকে পড়াশোনার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে বলেও দাবি করা হয় চিঠিতে। যদিও কবিগুরু হস্তশিল্প বাজারের জমিটি পি ডাবলু ডির অধীনে বলে দাবি করেন হস্ত শিল্প সমিতির সম্পাদক আমিনুল হুদা।
তিনি বলেন বিশ্বভারতীর সম্পূর্ণ অনৈতিকভাবে ওই জমি দখল করে কুটির শিল্পীদের জীবিকাকে ধ্বংস করতে চাইছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য কবিগুরু হস্ত শিল্প সমিতির জমি দখল চেয়ে ২০১৯ সালের অগাস্ট মাসে প্রতীকী অনশনে বসলেন বিশ্বভারতীর বিতর্কিত উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। কিন্তু তারপরেও জমি দখল করতে ব্যর্থ হয় বিশ্বভারতী। এরপর বোলপুর পৌরসভার নবনিযুক্ত পৌর প্রশাসক পর্ণা ঘোষ কে চিঠি লিখে ফের বিতর্কে উসকে দিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কুটির শিল্পীরা বিষয়টিকে পাত্তা না দিয়ে নতুন নাটক বলে উল্লেখ করে জানান বিশ্বভারতী যতই চেষ্টা করুক এ বাজার দখল মুক্ত করার কোন প্রশ্নই নেই। যদি তা করার চেষ্টা করেন তাহলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো জীবন ও জীবিকার স্বার্থে।
যদিও যাকে উদ্দেশ্য করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এই চিঠি সেই পর্ণা দেবী বলেন এখনো হাতে কোন চিঠি পাইনি,তবে বিষয়টি উচ্চপর্যায়ের বিবেচনাধীন।
কুটির শিল্পী ও ব্যবসায়ীদের জীবন ও জীবিকার স্বার্থে বোলপুর পৌরসভা কোন অনৈতিক সিদ্ধান্ত নেবে না। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে ওই স্থানে ব্যবসা করছেন। রবীন্দ্রনাথ সবাইকে নিয়ে চলতে পছন্দ করতেন আমরাও তাই চায়, ওই ব্যবসায়ীদের কবিগুরু হস্তশিল্প বাজার থেকে উচ্ছেদ করার কোন পরিকল্পনা এখন নেই।
No comments:
Post a Comment