ব্যতিক্রমী স্কুল শিক্ষক, করোণা আবহে স্কুল বন্ধ থাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রামের পড়ুয়াদের পাঠদান - Breaking Bangla |breakingbangla.com | Only breaking | Breaking Bengali News Portal From Kolkata |

Breaking

Post Top Ad

Monday 24 May 2021

ব্যতিক্রমী স্কুল শিক্ষক, করোণা আবহে স্কুল বন্ধ থাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রামের পড়ুয়াদের পাঠদান

  


 বর্তমান সমাজের বুকে এযেন এক ব্যাতিক্রমী  শিক্ষক।করোনা আবহের প্রথম ঢেউ থেকেই বিদ্যালয়ের পঠন  পাঠন প্রায় শিকেই উঠেছে । যে টুকু অন লাইন ক্লাস হয় গ্রাম বাংলাতে তার কোনও সুফল নেই।এমন পরিস্থিতিতে সকল সরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা যখন নিজের ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত, তখন সে কথা ভুলে গিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে ঘুরে কম বয়সি পড়ুয়াদের পড়া শুনার পাশাপশি তাদের সুস্থ্যতার খোঁজ খবর নিতের দৈনিক নিজে কাঁধে দায়িত্ব তুলে নিয়ে এগিয়ে এলেন যমজ শহর আজিমগঞ্জের সিঙ্গার হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার মন্ডল।


২০১৮ সাল বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী জুলেখা খাতুনের বাল্যবিবাহ আটকিয়ে , চরম লাঞ্চনা সহ্য করে তাকে বিদ্যালয়ে রেখে পড়াশুনার সুযোগ করে দেন সিঙ্গার হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার মন্ডল ।জুলেখা এখন সরকারি হোমে থেকে স্নাতক স্তরের ছাত্রী ।বিদ্যালয় যার নেশা,ছাত্র গড়া যার উৎসমুখ সেই শিক্ষক কোনও পরিস্থিতেই যে হাত গুটিয়ে থাকতে পারেন না ফের তার নজির গড়লেন গ্রামে গ্রামে ঘুরে পড়ুয়াদের পড়াশুনা আর পরিবারের খোঁজ খবর নিয়ে।তাই নিয়ম করে রীতিমতো রুটিন তৈরি করে তিনি প্রতিদিন ঘুরেছেন কল্যানগঞ্জ , কুলডাঙ্গা ,গঢ়রা ,পাখিরাডাঙ্গার মত গ্রাম গুলি ।


 সেখানে বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সঙ্গে তো বটেই কথা বলেছেন তাদের অভিভাবকদের সঙ্গেও । শিক্ষা রত্ন পুরষ্কার প্রাপ্ত ওই শিক্ষক জেনে নিয়েছেন পড়ুয়াদের সুবিধা অসুবিধার কথা ,খোঁজ খবর নিয়েছেন তাড়া বইয়ের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে চলছে কি না । আবার অভিভাবকদের জীবন জীবিকা নিয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেছেন তাদের প্রিয় মাস্টার মশাই ।সেই সঙ্গে সবার কাছে আবেদন রেখেছেন করোনা বিধি মেনে চলার , কি ভাবেই বা করোনা বিধি মেনে চলতে হয় নিয়েছেন তার পাঠও । 


আদিবাসি অধ্যসিত ওই বিদ্যালয় এলাকায় পড়ে প্রায় ১৫ টি গ্রাম  যার মধ্যে ছামু গ্রাম , করজোড়া ,আদিবাসি কুলডাঙ্গার মতো গ্রাম গুলিতে শিক্ষার অবস্থা খুবই করুন ।মাস্টার মশায়ের এই যোগাযোগে ভীষণ খুশি নবম শ্রেনীর আশা রানী ,অষ্টম শ্রেনীর রাখী মাড্ডিরা । তাদের বক্তব্য , “স্যার আগেও পড়া শুনার বিষয়ে খোঁজ নিতেন । কিন্তু এবার যে বাড়িতে এসে এই ভাবে পড়ার ব্যাপারে উৎসাহ দিয়ে যাবেন ভাবতে পারিনি ।” 


একজন শিক্ষকের এমন আন্তরিক প্রচেষ্টা দেখে অভিভূত হয়েছেন আসাদুল শেখ ,প্রতাপ ঘোষ ,বাসুদেব পালের মত অভিভাবকরা ।তারা জানিয়েছেন , “বাড়িতে বসেই ছেলে মেয়েরা কি ভাবে শিক্ষা নিবেন মুলত সেই ভাবনা থেকেই মাস্টার মশাইয়ের এই অভিযান ।” এদিকে যিনি এই উদ্যোগ নিয়েছেন সেই প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার মণ্ডলের দাবি , “একে বারে পিছিয়ে পড়া এলাকার মধ্যে আমার এই বিদ্যালয়ের অবস্থান । ফলে স্কুল খোলা না থাকলে তাদের পাঠের অভ্যাস নষ্ট হবে । এখন কি ভাবে ওদের পাঠ দেওয়া যায় সেই পথ খুঁজতেই আমার এই অভিযান ।”

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad