শেষ পর্যন্তত মাঠেই মারা গেলো দুঃসাহসিক চুরির মাস্টার প্ল্যান! তবে ধরা পড়ে গিয়ে পরিণতি হলো ভয়ানক। সাগরেদদের হায়ার করে নিয়ে গিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার উত্তর প্রান্তের শেষ সীমা ভিন রাজ্য-ঝাড়খন্ড লাগোয়া এলাকায় হাই ভোল্টেজ এর মূল্যবান বিদ্যুতের তার চুরি করতে গিয়ে গণপিটুনিতে মৃত্যু হল মুর্শিদাবাদের এক যুবকের।
মুর্শিদাবাদ ও ঝাড়খণ্ডের সংযোগস্থলের কাংলই নদী থেকে উদ্ধার হয় মমতাজ শেখ নামের বছর ছত্রিশের ওই যুবকের দেহ। তার বাড়ি মুর্শিদাবাদের বাহাদুরপুর এলাকায়। দেহ উদ্ধার হতেই এই ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে গোটা এলাকা জুড়ে।পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী।গণপিটুনির পিছনে কে বা কারা রয়েছেন, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া মুর্শিদাবাদের বাহাদুরপুরের এলাকার মমতাজ শেখ মূলত ফলের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। সম্প্রতি এলাকার একটি আমের বাগান কিনে অংশীদারি ব্যবসা করছিলেন তিনি। বাগানে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন মমতাজ। সঙ্গে বেশ কয়েকজন যুবকে সঙ্গী হিসেবে হায়ার করে। এক ঘণ্টাব্যাপী এলাকায় উপস্থিত না থাকার পরে, আচমকা কাংলই নদী থেকে উদ্ধার হয় ওই যুবকের ক্ষতবিক্ষত বিকৃত দেহ উদ্ধার হয়।
এদিকে ছেলের এমন পরিণতির খবরে স্বাভাবিকভাবেই কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবার।জানা গিয়েছে, বাড়ি থেকে বেরিয়ে দলবল নিয়ে পার্শ্ববর্তী ঝাড়খন্ড লাগোয়া এলাকায় হাইভোল্টেজ তার চুরির ছক কষেছিলেন মমতাজ। সেইমতো পৌঁছে গিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ডে। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি।সীমান্তবর্তী বারুঘুট এলাকার বাসিন্দারা কোনওভাবে বুঝে যায় যে, চুরির উদ্দেশে তাঁদের এলাকায় ঢুকেছে বেশ কিছু যুবক। দল বেঁধে যুবকদের ধরতে বেরিয়ে পড়েন তাঁরা। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে বন্ধুরা সবাই পালিয়ে গেলেও স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে যান মমতাজ। অভিযোগ, উত্তেজিত জনতা তাঁকে বেধড়ক মারধর করে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। এরপরই দেহ কাংলই নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
ঝাড়খণ্ড পুলিশের তরফে খবর দেওয়া হয় মুর্শিদাবাদে মমতাজের বাড়িতে। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, এখনও দেহ গ্রামে ফেরেনি। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তরা শাস্তি পাবে। সূত্র মারফত জানা যায়,সম্প্রতি ঝাড়খন্ডে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে সেখানকার পরিস্থিতি লন্ডভন্ড হয়ে রয়েছে সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে মমতাজ ও তাঁর দলবল বহুমূল্যবান বিদ্যুতের হাইভোল্টেজ তারের চুরির দুঃসাহসিক পরিকল্পনার ছক কষেছিল। এদিকে মৃত মমতাজের পরিবারের সদস্য ইসমাইল শেখ বলেন," যারা এই ভাবে চক্রান্ত করে আমাদের বাড়ির ছেলেকে খুন করেছে তাদের কঠোর শাস্তি চাই। পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুক"।
No comments:
Post a Comment