শহরের লোকালয়ে চিতার হানা। বহুতল বাড়ির সিঁড়ি ঘরে কব্জা করে বসলো চিতা। চিতার কবলে এলাকায় গুরুতর আহত এক, জখম আরও তিন। সোমবার শিলিগুড়ি চম্পাসরি সমরনগর এলাকায় আচমকা লোকালয়ে হানা চিতাবাঘের।স্থানীয়রা জানান ১০টা নাগাদ সমরনগর এলাকায় লোকালয়ে প্রথম নজরে আসে চিতা বাঘটি। অতর্কিত চিতার সামনে পড়ে যাওয়ায় এলাকার তিনজন চিতাবাঘের হামলায় জখম হন। এদের মধ্যে জয়ন্ত ভট্টাচার্য্য নামে এক ব্যাক্তি গুরুতর আহত।
তিন ব্যক্তির ওপর থাবা বসিয়ে এলাকার একটি বহুতল বাড়িতে ঢুকে পড়ে চিতাটি। ওই বাড়ির মালিক নয়না সিং ছেত্রী জানান বহুতল বাড়িতে তারা সহ মোট তিনটি পরিবারের বসবাস। এদিন তিনি বাড়ির পেছনের দিকে ছিলেন পরিবারের অন্যান্যদের চিৎকারের বাড়ির সিঁড়িতে চিতাটিকে দেখতে পান। চিতাটি সিঁড়ির ঘরের দিকে যেতেই বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সিঁড়ির লোহার গেটটি আটকে দেন। এবং বাড়ির মুখ্য গেট আটকে সীমানা প্রাচীর টপকে বাইরে বেড়িয়ে আসেন তিনি।যার জেরে গোটা এলাকা বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায়।
চিতাটি সিঁড়ি ঘরে আটকে পড়ে যাওয়ায় বাড়ির অন্যান্যরা দরজা বন্ধ করে আতঙ্কে ঘরের ভেতর ঠাঁই নেয়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় সুকনা বনদপ্তরের আধিকারিক ও সুকনা ওয়াইল্ড লাইফ স্কোয়ার্ড। ঘটনাস্থলে পৌছায় প্রধাননগর থানার পুলিশ। বাঘটিকে কেন্দ্র করে বাড়িটি ঘিরে এলাকাবাসীদের ভিড় জমায়েত হয়ে ওঠে। একদিকে লোকালয়ে চিতা বাঘ অন্যদিকে কোভিড বিধি ভেঙে প্রচুর লোক সমাগম নিয়ন্ত্রণে আনতে কাল ঘাম ছোটে পুলিশের। পুলিশের তরফে এলাকা বাসীদের বারংবার সতর্ক করে নির্দিষ্ট দূরত্বে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং একত্রে জমায়েত না করার কথা বলা হয়।
অন্যদিকে বন দপ্তরের কর্মীরা লাগাতার চিতাটিকে কাবুতে আনার চেষ্টা করতে লাগেন। বাড়ির বাইরে থেকে সিঁড়ি ঘরে চিতাটিকে তাঁক করে ঘুম পাড়ানি গুলি প্রয়োগের চেষ্টা করা হয়। তবে বাড়ির ভেতরে সিঁড়ি ঘর ও দোতলায় নামার সিঁড়ি বিস্তৃত এই এলাকায় দিয়ে ছটফট করতে থাকে চিতাটি। প্রায় কয়েক ঘন্টার লাগাতার চেষ্টার পর অবশেষে বাড়ির বাইরে সিঁড়ি ঘরের জানলা দিয়ে ঘুম পাড়ানি গুলি ছুড়ে চিতাটিকে কাবুতে এনে জাল ফেলে উদ্ধার করেন বনকর্মীরা।
জালে আটক করে বাড়ির বাইরে এনে বনকর্মীরা খাঁচাবন্দি করে এলাকা থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যান চিতাটিকে। এরপরই চাপা আতঙ্ক ভেঙে স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়েন বাড়ির সদস্য ও এলাকাবাসীরা বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে শিলিগুড়ি শহরের লোকালয়ে কিভাবে চিতাটি এলো? ওই এলাকার পার্শ্ববর্তী লাগোয়া কোনো বনাঞ্চলও নেই যা চিন্তায় ফেলছে বন আধিকারিকদের। অন্যদিকে জখম তিন ব্যক্তি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
No comments:
Post a Comment