উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কোভিড ওয়ার্ডে অগ্নিকাণ্ড। করোনা আক্রান্ত রুগীর শয্যার পাশে থাকা দ্রুত গতিতে অক্সিজেন সরবরাহকারী এইচ এফএনও যন্ত্র থেকে অগ্নিসংযোগ বলে প্রাথমিক অনুমান মেডিকেল কর্তৃপক্ষের। যন্ত্রের মোটরে অগ্নিসংযোগ ঘটে। শনিবার সকাল ৯টা ০৫ নাগাদ আচমকা উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের কোভিড ব্লকে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ওয়ার্ডের ফায়ার এলার্ম বেজে ওঠায় তড়িঘড়ি ওই ওয়ার্ডে থাকা ৭জন রুগীকে স্বাস্থ্যকর্মীরা সরিয়ে হাই ডিপেন্ডেন্সি ইউনিটে স্তানান্তরিত করেন।
স্বাস্থ্য কর্মীদের দ্রুততার সঙ্গে চটজলদি পদক্ষেপ নেওয়ার জেরেই কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। রুগী ও স্বাস্থ্য কর্মীরা সকলেই সুস্থ্য রয়েছেন। স্বাস্থ্য কর্মীদের অনেকেই পিপিই ছাড়া রুগীদের উদ্ধারে নেমে পড়েন। কিছু সময়ের জন্য কোভিড ওয়ার্ডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে পৌছায় দমকলের দুটি ইঞ্জিন। তবে অগ্নি সংযোগের ঘটনার পরই ওয়ার্ডের স্বাস্থ্যকর্মীরা কোভিড ব্লকে থাকা অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থার মাধ্যমে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। স্বাস্থ্যকর্মীদের তৎপর ভূমিকার জেরেই আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই কাবুতে আনা সম্ভব হয়।
যার কারনে বড় দুর্ঘটনা হাত থেকে রক্ষা মিলেছে বলে জানান মেডিকেল সুপার সঞ্জয় মল্লিক। দমকলের পাইপ জানালা দিয়ে কোভিড ব্লকে প্রবেশ করিয়ে কাজ চলে। ওই কোভিড ব্লক একের ভেতরে থাকা ওয়ার্ডের যাবতীয় কোভিড চিকিৎসার জরুরী ওষুধপত্র, ইঞ্জেকশন ও যন্ত্রপাতি তড়িঘড়ি বাইরে বের করে আনা হয়। ওয়ার্ডের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় স্বাস্থ্য কর্মীরা। ঘটনার পরই উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার সঞ্জয় মল্লিক কোভিড ব্লক পর্যবেক্ষনে আসেন।
মেডিসিন বিভাগীয় প্রধান ডাঃ দ্বীপাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় ও উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডিন অফ স্টুডেন্ট এফেয়ার্স ডাঃসন্দীপ সেনগুপ্ত পরিস্থিতি সরজমিনে খতিয়ে দেখেন। উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সুপার জানান সকাল ৯ টা ০৫নাগাদ কোভিড সিসিইউ-এর ছয় নাম্বার রুগীর শয্যার কাছে অক্সিজেন সরবরাহকারী এইচএফএনও একটি যন্ত্র চলছিল, তাতেই অগ্নিসংযোগ ঘটে। কোভিড সময়তে লাগাতার যন্ত্রটি চলার জেরেই এই ধরনের ঘটনা বলে মনে করছেন তিনি। তিনি বলেন সঙ্গে সঙ্গে ওয়ার্ডের ফায়ার এল্যারম বেজে ওঠে।
ওয়ার্ডের চিকিৎসা কর্মীরা তড়িঘড়ি সঙ্কটের মুহূর্তে ওই ওয়ার্ডের সাতজন রুগীকে নিরাপদে উল্টোদিকের এইচডিইউ ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করে। করোনায় মূমূর্ষ রুগীর চিকিৎসার যন্ত্রপাতি ও ওষুধপত্র সরিয়ে ফেলা হয়। দমকল আসার আগেই ফায়ার এক্সটিংগুইসার ব্যবহার করা হয়। যার জেরে ধোঁয়া ছড়িতে পড়ে গোটা ওয়ার্ডে।
অন্যদিকে নিরাপত্তার খাতিরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।ওয়ার্ডের জানালার কাঁচ ভেঙে সে সময় ধোঁয়া বের করার চেষ্টা করেন স্বাস্থ্য কর্মীরা বলে জানান তিনি। তিনি আরও জানান রুগীরা প্রত্যেকে সুস্থ্য রয়েছেন। কোভিড ব্লকটি পরিষ্কার করে পুনরায় স্থানান্তর করা হবে ওই ওয়ার্ডে। মেডিকেলের পূর্ত, বিদ্যুৎ ও বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারদের একটি টিম এদিনই ওই ওয়ার্ডে ঢুকে এই পুরো বিষয়টির অন্তর্তদন্ত করে। রবিবার তাদের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার বিশ্লেষনাত্বক তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করে পেশ করতে বলা হয়েছে।
No comments:
Post a Comment