কোনো বাড়িতে কেউ করোনা সংক্রামিত হয়েছে জানলেই এমনিতেই লোকে দূরে সরিয়ে রাখে। তখন কে কার মুখে খাবার তুলে দেয়। এসব সাত-পাঁচ ভেবে নবদ্বীপ ব্লাড ব্যাংকের তরুণ কর্মী শহরের ষষ্ঠী তলার বাসিন্দা শান্তনু চক্রবর্তী নিজের বাড়িতেই খুলে ফেলল কোভিড কিচেন। নবদ্বীপ শহরে আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি রান্না করা খাবার পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা। এদিন সকাল ৮ টা বাজতেই শান্তনুদের বাড়িতে তুমুল ব্যস্ততা। তাঁর মা এবং তাঁর স্ত্রীকে হেঁসেলে ২৮ জনের রান্না করতে দেখা গেল।
সাতসকালেই বাজার থেকে টাটকা আনাজ আর মাছ নিয়ে এসেছেন শান্তনু নিজেই। দুপুর ১ টার মধ্যে বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়ার পালা চলছে। সেই কাজে শান্তনুর সঙ্গী এক ঝাঁক বন্ধু। তাঁরা ড্রাগেন বয়েজ নামে সেই স্কুল বেলা থেকে খেলাধুলা বা কুইজে নামতেন। এখন তাঁরাই ফয়েল প্যাক করে সাইকেল বা মোটরবাইকে করে খাবার পৌঁছে দিয়ে আসছেন নবদ্বীপ শহরের নানা প্রান্তে। তবে পুরোটাই বিনামূল্যে। সাধারণত ভাত, মুগ ডাল, বেগুন ভাজা, আলু পটলের রসা, পোস্তর তরকারি, মাছ এদিন দেওয়া হয়েছে।
শান্তনু বাবু বলেন, আমি নিজে সরকারি হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুবাদে জানি করোনা আক্রান্তদের শারীরিক সমস্যার চেয়েও অনেক ক্ষেত্রে সামাজিক সমস্যা বেশি হচ্ছে। হাতে টাকা থাকলেও পাচ্ছেন না খাবার। একটি পরিবারের সকলে আক্রান্ত হলে কতটা যন্ত্রণাদায়ক তা আমি নিজের চোখে অনুভব করেছি। বেশি করে অনুভব করেছি কাকার অসুস্থতার সময়ে। তখনই ঠিক করি আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ করব। বাড়িতে বলতেই মা আর স্ত্রী রান্নার দায়িত্ব নিয়ে নিলেন। আর ড্রাগেন বয়েজ কে বলতেই তাঁরাও রাজি হয়ে গেলেন। আর এদিন থেকেই শুরু হয়ে গেল নবদ্বীপ শহরে কোভিড আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি রান্না করা খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ।
No comments:
Post a Comment