ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড়। তার আগে কোনরকম ঝুঁকি না নিয়ে লিচু পাড়ার কাজ শুরু করে দিলো চাষীরা। গতবছর আমফানের স্মৃতি নতুন করে যাতে ক্ষয়ক্ষতির কথা চাষীদের মনে না করিয়ে দেয় , সেজন্য এবারে আর দেরি নয়, অপরিপক্ক থাকলেও গাছ থেকে লিচু পাড়ার কাজ শুরু করে দিয়েছেন বহুচাষীরা। ইতিমধ্যে মালদার বাজারেও লিচু বিক্রি শুরু হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি অনেক আম চাষীরাও তাদের বাগানে আম পাড়ার কাজ শুরু করেছেন। কেউ আর এই ঘূর্ণিঝড়ের ঝুঁকি নিতে চাইছেন না।
যেভাবেই হোক লোকসানের মাত্রা ঠেকাতে হবে, চাষীদের এমনই মনোভাব নিয়েই এখন বাগানে, বাগানে চলছে লিচু পাড়ার কাজ। তবে কিছু কিছু বাগানে জলদি জাতের আম পাড়ার কাজও শুরু করে দিয়েছেন চাষীরা। এক্ষেত্রে চাষীদের বক্তব্য, এবছর করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও লিচুর উৎপাদন ব্যাপক হয়েছে । অনুকূল আবহাওয়া থাকার কারণে লিচু সঠিক সময়ে পেরেই রপ্তানি করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু শুনতে পেয়েছি কয়েকদিন পরেই নাকি পশ্চিমবঙ্গে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়। তার প্রভাব পড়তে পারে মালদায়। এরফলে ফলনে প্রচুর পরিমাণে ক্ষতি হতে পারে। তাই আগেভাগেই এখন লিচু পাড়ার কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে। যাতে করে লোকসানটা যেন ঠেকানো যায়।
উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবছর মালদা জেলায় ১২ হাজার মেট্রিকটনেরও বেশি লিচু উৎপাদনে আশঙ্কা রয়েছে। মূলত কালিয়াচক ১,২,৩, ইংরেজবাজার , মানিকচক, রতুয়া ১ ব্লকে লিচু চাষ বেশি হয়ে থাকে । এছাড়া বিক্ষিপ্তভাবে মালদা জেলার অন্যান্য ব্লকগুলোতেও লিচু চাষ হয় । জেলায় প্রায় ১৩০০ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে বোম্বাই এবং দেশিগুটি প্রজাতির লিচু চাষ হয়। কয়েকদিন আগেই মালদায় ব্যাপক ঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু তাতেও লিচুর ফলনে তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয় নি । বরঞ্চ লিচুর গোড়া শক্ত করতে এই কালবৈশাখী ঝড় বৃষ্টির প্রয়োজন ছিল বলেও মনে করছে উদ্যানপালন দপ্তর। গাছে বৃষ্টির জলের প্রয়োজনীয়তা থাকায় লিচু অনেকটাই ভাল হয়েছে।
যার ফলে আকৃতি ও স্বাদেও অনেকটা ভালো হবে এ বছরের উৎপাদিত মালদার লিচু। উদ্যানপালন দফতরের অধিকর্তা রাহুল চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এবছর গতবারের তুলনায় মালদায় লিচুর উৎপাদন অনেকটাই বেশি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে প্রায় ১২ হাজার মেট্রিকটন লিচুর উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু হঠাৎ করে দেখতে পাচ্ছি মালদার বাজারে লিচু নেমে পড়েছে । এর কারণ হিসেবে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবের কথা কেউ কেউ বলছেন।
No comments:
Post a Comment