রূপকথার থেকে লিলিপুট আর গালিভারসের গল্প আমরা সবাই পড়েছি কম বেশি। সেখানে গালিভারস হাজির হয়েছিল এক লিলিপুটের দেশে। হাতগুনে বলে দেওয়া যাবে সেখানকার মানুষগুলো কতটা লম্বা। সেই দেশে গালিভার আর লিলিপুটদের সঙ্গে মজার মজার কিছু কাণ্ড ঘটেছিলো। বিংশ শতাব্দীতে আধুনিক বিশ্বে সর্বত্র উচ্চতায় খাটো মানুষদের ‘বামন’ (dwarf) বলা হয়। অথচ বেশ কিছু প্রজাতির মানুষ জিনগত কারণেই উচ্চতায় কম হয়।
এশিয়া মহাদেশেই একটি গ্রাম আছে যেখানে অদ্ভুতভাবে মানুষজন বামন (dwarf) রূপেই জন্ম নেয়। ইরানের পূর্ব খোরাসান প্রদেশের এক গ্রাম মাখুনিক। রহস্যময় এই গ্রামটিকে লিলিপুটদের (lilliput) গ্রাম বলা হয়। গ্রামটি প্রায় এক হাজার ৫০০ বছরের পুরনো বলে মনে করা হয়। ইরান-আফগানিস্তান সীমান্ত ঘেঁষে দক্ষিণ খোরাসান প্রদেশের সারবিশেহ কাউন্টির পল্লী জেলা দোরেহতে এই গ্রামটি রয়েছে। জানা যায় যে এখানকার মানুষ স্বাভাবিক উচ্চতার মানুষের থেকে কম করে হলেও ৫০ সেন্টিমিটার খাটো। বেশ কয়েকশ বছর আগে তারা এই গ্রামে রয়েছে। অতীতে এখানকার বাসিন্দাদের উচ্চতা নাকি এক মিটারের বেশি লম্বা হতো না।
আবার চীনের সিচুয়ান প্রদেশের ইয়াংসি গ্রামে প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ নাকি বামন (dwarf)। এখানকার মানুষের গড় উচ্চতা ৪ ফুট বলে মনে করা হয়। গ্রামটির বামনদের সর্বোচ্চ উচ্চতা ৩ ফুট ১০ ইঞ্চি। এখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে এভাবে উচ্চতা কম হওয়ার বিষয়টি নিয়ে চীনের সরকার একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি নিয়োগ করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো যে সেই কমিটি সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কারণ তুলে ধরতে পারেনি। সেই কারণে এই গ্রামের অধিবাসীরা উচ্চতার এই বিষয়টি নিয়ে কিছু ধারণা গড়ে তুলেছে। বাসিন্দারা মনে করে যে এই গ্রামে ওয়াং নামে এক ভদ্রলোক বাস করতেন। তিনি একবার অদ্ভুত পা যুক্ত কালো রঙের এক কচ্ছপ (tortoise) দেখতে পেয়েছিলেন।
এই ব্যক্তির কাছ থেকে খবর পেয়ে গ্রামের সবাই ওই কচ্ছপ (tortoise) দেখার জন্য ভিড় করে। তখন অনেকে প্রাণ রক্ষার তাগিদে এই কচ্ছপটিকে (tortoise) ছেড়ে দিতে বলেছিলো। আবার অনেকের দাবি ছিল একে মেরে রান্না করা হয় যেন। শেষ পর্যন্ত এই অদ্ভুত কচ্ছপটির (tortoise) ওপর অত্যাচার করার পর একে মেরে গরম আগুনে ঝলসে খাওয়া হয়। তারপর থেকেই নাকি এই গ্রামে এরকম খর্বাকৃতির মানুষ (dwarf) জন্ম নিতে শুরু করেছিল।
No comments:
Post a Comment