তীব্র গরমে বাইরে থেকে এসে এক গ্লাস ফ্রিজের ঠাণ্ডা জল খেলে শরীরটা যেন একেবারেই জুড়িয়ে যায়! এই সময়ে তৃষ্ণার্ত, ক্লান্ত, অবসন্ন অবস্থায় ঠাণ্ডা জল ছাড়া যেন আমরা চলতেই পারি না। কিন্তু এই গরমে ঠাণ্ডা জল পান করাটা আসলে কতটা নিরাপদ? চিকিৎসকদের মতে, ঠাণ্ডা জলের উপকার তো নেইই বরং শরীরের অনেক ধরনের ক্ষতি করে। তার মধ্যে সবচেয়ে বড় ক্ষতি করে হার্টের। তাছাড়া হজমের সমস্যা, ঠাণ্ডা লাগা, সাইনাস ব্লকেজ, এসবও ঠাণ্ডা জলের কারণেই হয়।
গর্ভপাতের সম্ভাবনা
গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ঠাণ্ডা জল পান করলে গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যায়। ঠাণ্ডা জল পান করার ফলে জরায়ুর সঙ্কোচন হয়। গর্ভাবস্থায় এধরনের সঙ্কোচন গর্ভপাতের ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।
হার্ট এর সমস্যা
ঠাণ্ডা জল পানের কারণে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয় হার্টের। গরম থেকে এসেই ঠাণ্ডা জল পান করলে শরীরের শিরা উপশিরা সঙ্কুচিত হয়ে যায়। ফলে স্বাভাবিক রক্ত সঞ্চালন করতে হার্টের উপর বাড়তি চাপ পড়ে। এই বাড়তি চাপ হার্টের জন্য একেবারেই ভালো না।
জ্বর হওয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুত করে
আমাদের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। কিন্তু ঠাণ্ডা জল পান করলে আমাদের রক্ত হঠাৎ করেই শীতল হয়ে যায়। ফলে শরীরে ভেতরের অংশে হঠাৎ করেই অনাহুত অস্বস্তি দেখা দেয়। এধরনের অস্বস্তি জ্বরের ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দেয়।
টনসিলের সমস্যা হতে পারে
ঠাণ্ডা জলে সহজে ঠাণ্ডা লাগার সম্ভাবনা থাকে ফলে টনসিল ফুলে গিয়ে সমস্যা হতে পারে।
শরীরে পর্যাপ্ত জলের চাহিদা পূরণ হয় না
ঠাণ্ডা পানিতে তৃষ্ণা মেটে চট করে, তৃপ্তি চলে আসে তাড়াতাড়ি। ফলে শরীর মনে করে তার আর পানি পানের প্রয়োজন নেই।ফলে শরীরের প্রয়োজনীয় পানির চাহিদা মেটে না। এ ঘাটতি থেকে পানিশূন্যতা তৈরি হয় যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
ঠাণ্ডা জলে হজমের সমস্যা হয়
ঠাণ্ডা জল পান করার ফলে পাকস্থলী খাবার হজমের চাইতে ঠাণ্ডা জলকে শরীরের তাপমাত্রায় নিয়ে আসতে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ে। ফলে পাকস্থলীর যে মূল দায়িত্ব সেই খাবার হজমের প্রক্রিয়ায় ছেদ পড়ে, হজমে সমস্যা দেখা দেয়।
দাঁতের ক্ষতি হয়
ঠাণ্ডা জল দাঁতের এনামেলের ক্ষতি করে মারাত্মক ভাবে।গরম থেকে ঠাণ্ডা জলের সংস্পর্শে আসা মাত্রই দাঁতের বহিরাবরণ সংকুচিত হয়। ফলে এনামেলে ফাটল ধরে। এছাড়া মাড়ি ক্ষয়ের অন্যতম একটি কারণও হল ঠাণ্ডা জল।
শরীরের শক্তি ক্ষয় করে
আমাদের শরীরের তাপমাত্রা যেহেতু স্বাভাবিক মাত্রায় ৯৮.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। তাই ঠাণ্ডা জল যখন পাকস্থলীতে জমা হয় তখন পাকস্থলী তা শরীরের তাপমাত্রায় নিয়ে আসে।ফলে শরীরের অহেতুক শক্তি খরচ হয়।
ব্যায়ামের পরে ঠাণ্ডা জল ক্ষতিকর
ব্যায়ামের পরে গরম জল খাওয়া ভাল। কারণ ঠাণ্ডা জল খেলে তা শরীরে দ্রুত শোষিত হয়। ফলে শরীরে জলের চাহিদা পূরণ হয় না।
খনিজের অনুপস্থিতি
সাধারণ জল স্বাভাবিক অবস্থায় বিভিন্ন ধরনের খনিজ উপাদানে পূর্ণ থাকে। যা আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কিন্তু জল ঠাণ্ডা হয়ে গেলে এসব খনিজ উপাদানের কার্যকারিতা কমে যায়। তখন শরীরের জন্য এরা আর কোনো কাজ করতে পারে না।
No comments:
Post a Comment